সুবর্ণচরে আগাম ধানে কৃষকের মুখে হাসি

নোয়াখালী প্রতিনিধি: চলতি মৌসুমে নোয়াখালী সুবর্ণচরে আগাম জাতের ব্রি ধান ৭৫ চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এটি এ উপজেলায় সর্বপ্রথম পরিক্ষামূলক ভাবে আবাদ করেছে বলে জানা যায়। তবে ধানের ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসি লক্ষণীয়। এতে অন্যান্য কৃষকরাও ঝুকছে ব্রি ধান ৭৫ জাত আবাদে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের রোপা আমনে ভরেছে মাঠ। কৃষকের মুখে নেই ক্লান্তির ছাপ। ধানে ধান লেগে শিন শিন শব্দ মনকে করেছে প্রাণবন্ত। বাতাসে দোল খাওয়া কাঁচা, পাঁকা আধাপাঁকা ধানের ঘ্রাণে কৃষকরা বিমোহিত। হাসছে সোনালি ধান, হাসছে কৃষাণ-কৃষাণী। যতটুকু চোখ যায়, শুধু দেখা যায় আমনের ধান আর ধান। দিন-মাস-বছর যতই পার হচ্ছে, ততই যেন নতুন নতুন আগাম জাতের ধান কৃষককে উজ্জীবিত করে কৃষকের অভাব অনটন দূর করছে।
তবে এবারের আমন আবাদের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। প্রথম থেকেই কৃষকের মধ্যে ছিল শঙ্ক। প্রথমত, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়া, দ্বিতীয়ত অসময়ে বৃষ্টি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের মাথায় হাত পড়ে। আমনের যে টার্গেট তারা করেছিল, তা পূরণ না হওয়ার শঙ্কাই দেখা দেয়। বর্ষাকাল পেরিয়ে যাওয়ার পর ধানগাছ দেখে মোটামুটি একপর্যায়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। এরপর হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাত। তবে ব্রি-৭৫ ধান আগাম চাষ করায় অন্যান্য ফসল কিছুটা নষ্ট হলেও এটি তেমন নষ্ট হয়নি বলে জানান কৃষক।
চর ওয়াপদা ইউনিয়নের কৃষক আবুল বাসার বিটিসি নিউজকে জানান, কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিনামূল্যে সরকারিভাবে ব্রি-৭৫ জাতের ৫ কেজি ধান দিয়েছে। সেই সাথে আরো দুই ধরনের সার পেয়েছি। বীজ বোপনের ২০-২২ দিন পর বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে ৫ গন্ডা উঁচু জমিতে রোপণ করি। রোপণের ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফলন ঘরে তুলি।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও অন্যান্য জাতের ধান সাড়ে ৩ একর জমিতে চাষ করি। সেগুলো এ ধানের অনেক পরে আসে। এধান আগাম আসায় বিক্রি করতে বাজারমূল্য বেশি পাওয়া যাবে এবং খড় জ্বালানী বা গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে আগামীতে কৃষি অফিস থেকে আরো বেশি সহযোগীতা পেলে ব্যাপক হারে চাষাবাদ করার আশা করছি।
আরেক কৃষক মো. দিদার বিটিসি নিউজকে জানান, ধান কাটার পরিপূর্ণ সৃজনের তুলনায় আগাম ধান চাষ করলে গ্রামে কৃষি শ্রমিকের মজুরি কিছুটা সস্তায় পাওয়া যায়। এতে আমাদের তেমন একটা চিন্তা করতে হয় না। এ আগাম ধানের কারনে তিন সৃজনী চাষাবাদ করা সম্ভব। আমনের পরে সরিষা বা অন্যান্য ফসল চাষ করে পরে বোরো ধানের চাষা করা যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজকে বলেন, সুবর্ণচরে চলতি বছরে ৩৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে ২১ ধরনের জাতের ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ৭৫ জাতটি সুবর্ণচরে এ সর্বপ্রথম পরিক্ষামূলক ভাবে আবাদ করেছে কৃষক। এ আগাম জাতের ধান চাষ করায় এটিসহ মোট তিন সৃজনী চাষ করতে পারবে। আমনের পরে সরিষা বা অন্যান্য ফসল করে পরে বোরো ধানের চাষ করে স্বল্প সময়ে স্বাবলম্বী হতে পারবে কৃষক। কৃষকের কল্যাণে আমরা কৃষি অফিস সব সময় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.