সুপার ওভার রোমাঞ্চ শেষে ওমানকে হারাল নামিবিয়া

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: লো স্কোরিং ম্যাচে ওমানকে অল্পতেই গুটিয়ৈ সহজ জয়ের মঞ্চ তৈরি করেছিল নামিবিয়া। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নয় ওমানও। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে সুবিধা করতে দিল না তারা। তবে কষ্টে ম্যাচ সুপার ওভারে নিয়েও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় এশিয়ার দলটির। তাদের হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসরে শুভসূচনা করল নামিবিয়া।
ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে এবারের বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে সোমবার সুপার ওভারে জিতেছে নামিবিয়া। সুপার ওভারে তাদের দেওয়া ২২ রানের লক্ষ্যে ১০ রান করতে পারে ওমান।
এর আগে ওমানকে ১০৯ রানে গুটিয়ে নিজেরাও ৬ উইকেটে ১০৯ রানে আটকে যায় নামিবিয়া। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
সেখানে বিলাল খানের করা প্রথম ৪ বলে একটি করে ছক্কা-চারে ১৩ রান নিয়ে জেরহার্ড এরাসমাসকে স্ট্রাইক দেন ডেভিড ভিসা। শেষ দুটি বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ওমানকে ২২ রানের লক্ষ্য দেন এরাসমাস।
বল হাতেও ওয়াইজের উপর আস্থা রাখেন নামিবিয়া অদিনায়ক এরাসমাস। দারুণভাবে এর প্রতিদান দেন ভিসা। প্রথম তিন বলে ২ রান দিয়ে তুলে নেন নাসিম খুশির উইকেট। পরের ৩ বলে দেন ৮ রান। ম্যাচসেরাও হন ভিসা।
এরও আগে জয়ের জন্য ১১০ রানের লক্ষ্যে শেষ ওভারে ৫ রান করতে হতো নামিবিয়ার, হাতে তখনও ৬ উইকেট। এই রানও করতে পারেনি তারা।
মেহরান খানের করা সেই ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড ম্যাচের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী জান ফ্রাঙ্কলিন (৪৮ বলে ৪৫)। পরের বলে রান নিতে পারেননি নতুন ব্যাটার জেন গ্রিন। তৃতীয় বলে গ্রিন হন এলবিডব্লিউয়ের শিকার। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষায় হননি গ্রিনের।
বাকি তিন বলে ৫ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি ডেভিড ভিসা ও মালান ক্রুগার। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
লো স্কোরিং এই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই ছিল নামিবিয়ার অনুকূলে। লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় বলেই ওপেনার মিচেল ভন লিঙ্গেনকে হারায় তারা। এরপর বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান না এলেও উইকেট বাঁচিয়ে জয়ের পথেই ছিল তারা। দ্বিতীয় উইকেটে নিকোলাস ডেভিনকে (৩১ বলে ২৪) নিয়ে ৪৯ বলে ৪২ ও অধিনায়ক জেরহার্ড এরাসমাসকে (১৬ বলে ১৩) নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৩৬ বলে ৩১ রান যোগ করেন ফ্রেইলিঙ্ক। এরপর প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি জেজে স্মিত (১২ বলে ৮), ভিসারা (৮ বলে ৯)। পারেননি ফ্রেইলিঙ্কও।
অল্প পুঁজি নিয়েও দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরানো মেহরাব ৩ ওভারে স্রেফ ৭ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট। মোট সাতজন বোলার ব্যবহার করেন ওমান অধিনায়ক আকিব।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট হারায় ওমান। তাদের এই উইকেট হারানোর ধারায় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন খলিল কাইল। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে সর্বোচ্চ ৩৪ রান। চতুর্থ (২৪ বলে ২৭) ও পঞ্চম উইকেট (৩৩ বলে ৩১) জুটির সেই প্রতিরোধে তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন জিশান মাকসুদ (২০ বলে ২২) ও আয়ান খান (২১ বলে ১৫)। কিন্তু বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান আসেনি। ২ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় এশিয়ার দশটি।
৪ ওভারে ২১ রানে ৪ উইকেট নেন রুবেন ট্রাম্পেলম্যান। ৩.৪ ওভারে ২৮ রানে ৩টি শিকার ধরেন ডেভিড ভিসা। ৪ ওভারে ২০ রানে ২টি নেন জেরহার্ড এরাসমাস।
বাংলাদেশ সময় আগামী বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিজটাউনে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে ওমান। একই দিন রাতে একই মাঠে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে নামিবিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওমান: ১৯.৪ ওভারে ১০৯ (প্রজাপতি ০, নাসিম ৬, আকিব ০, জিশান ২২, খালিদ ৩৪, আয়ান ১৫, নাদিম ৬, মেহরান ৭, শাকিল ১১, কালিমউল্লাহ ২, বিলাল ১*; ট্রাম্পেলম্যান ৪-০-২১-৪, ভিসা ৩.৪-০-২৮-৩, লুনগামেনি ৪-০-১৮-০, শুলজ ৪-০-২০-১, এরাসমান ৪-০-২০-২)।
নামিবিয়া: ২০ ওভারে ১০৯/৬ (ফন লিনগেন ০, ডেভিন ২৪, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৫, এরাসমাস ১৩, স্মিট ৮, ভিসা ৯*, গ্রিন ০, ক্রুগার ১*; বিলাল ৪-০-২৫-১, শাকিল ৩-০-২০-০, কালিমউল্লাহ ২-০-১০-০, আকিব ৪-১-১৭-১, মেহরান ৩-১-৭-৩, জিশান ২-০-১২-০, আয়ান ২-০-১২-১)।
ফল: ম্যাচ টাই (সুপার ওভারে জয়ী নামিবিয়া)।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডেভিড ভিসা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.