সালমান রুশদির ওপর হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ উপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী যুবকের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। পুলিশের হাতে আটক হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির বাসিন্দা হাদি মাতার (২৪)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাকারী ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সমর্থক ও শিয়া অনুসারী বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও হাদি মাতারের সঙ্গে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) বাহিনীর কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ভুয়া ছিল। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
তবে, হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। হাদি মাতারের আগের রেকর্ড জানতে এবং হামলার উদ্দেশ্য বের করতে চেষ্টা করছে পুলিশ।
নিউইয়র্কের পুলিশ বলছে, শিটোকোয়া ইন্সটিটিউশনে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি দৌড়ে মঞ্চে গিয়ে মিস্টার রুশদি এবং তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ওপর আক্রমণ করে।
রুশদীর মুখপাত্র অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলছেন, সালমান সম্ভবত চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুর নার্ভ এবং লিভার ছুরির আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুলিশ এখনও এই হামলার মোটিভ সম্পর্কে কোন ধারণা দিতে পারেনি। তারা অনুষ্ঠানস্থলে পাওয়া ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও একটি ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখছে।
মিস্টার রুশদিকে গলায় ও পাকস্থলী বরাবর ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। হামলার পরপরই তাকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঞ্চে সালমান রুশদির সঙ্গে থাকা সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হেনরি রিসও মাথায় সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রিস একটি অলাভজনক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা।
সালমান রুশদিকে তার লেখার জন্য ইরানি নেতৃবৃন্দ হত্যার ঘোষণা দিয়েছে ১৯৮৯ সালে। অবশ্য ইরান পরে এই ঘোষণা তুলে নেয়। সে সময় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা প্রয়াত আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি সালমান রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এ ইসলামের বিরুদ্ধে অবমাননামূলক বিষয় রয়েছে উল্লেখ করে রুশদিকে হত্যা করার জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানিয়ে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি ফতোয়া জারি করেন।’
এ লেখকের জন্ম ১৯৪৭ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে। ১৯৭৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ১৪টি উপন্যাস লিখেছেন। বিশ্ব সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বুকার পুরস্কারের জন্য তিনি পাঁচবার মনোনয়ন পেয়েছেন। রুশদি তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’-এর জন্য ১৯৮১ বুকার পুরস্কার অর্জন করেন। ইরান তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করার পর দীর্ঘ ৯ বছর আত্মগোপনে ছিলেন বিশ্বখ্যাত এ লেখক। #

 

 

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.