সার্বিয়ায় অনলাইন ক্লাসের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অনলাইন ক্লাসের প্রতিবাদে সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নভি সাদে হাজারো জনতা ও শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে এসেছে। চলমান দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার (২৬ এপ্রিল) এই বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবরোধকে পাশ কাটাতে সরকার অনলাইন ক্লাস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
নভি সাদে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ কয়েক মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলনের সর্বশেষ ধাপ। নগরীর একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় যে ক্ষোভের সূত্রপাত, তাই মূলত এই আন্দোলনের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকের মতে, দুর্ঘটনাটি সরকারি দুর্নীতির নগ্ন প্রমাণ।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সার্বিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে ও সাইকেল চালিয়ে নভি সাদে পৌঁছায়। শনিবার সকালে তারা ১৬ মিনিটের নীরবতা পালন করে দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলে বড় আকারের প্রতিবাদ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। ১৯৯০-এর দশকের পর সার্বিয়ায় এটি সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় অবরোধকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হয়েছে।
চলতি মাসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা কর্মীদের ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেন, ক্লাসগুলো অনলাইনে নেও য়া হবে। শনিবারের প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়গুলোর এক বিবৃতিতে বলা হয়, অনলাইন ক্লাস কোনো সমাধান নয় এবং এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
বেলগ্রেডের এক উচ্চবিদ্যালয়ের ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মাতেয়া ফেইন্দোভিচ হেঁটে নভি সাদ শহরে এসেছেন প্রতিবাদ জানাতে। তিনি বলেন, অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিদ্যালয় অবরোধ থামানো যাবে না। আমরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেব না। এই শিক্ষাবর্ষ চালিয়ে যাওয়ারও কোনো মানে নেই, কারণ আমরা ইতিমধ্যে পাঁচ মাস ধরে ধর্মঘটে আছি।
বিভিন্ন সংস্থার দাবি, বিদ্যালয় অবরোধে অংশ নেওয়ায় কিংবা কাজ না করায় প্রায় ২০ হাজার শিক্ষককে বেতন বন্ধ করে দিয়েছে সার্বিয়ার সরকার।
প্রতিদিন প্রায় বড় বড় শহরগুলোতে শত শত হাজার মানুষ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। প্রতিবাদকারীদের চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন এবং সরকার ভেঙে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুচিচ কখনো সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন, আবার কখনো শিক্ষার্থীদের ‘রাষ্ট্রের জন্য হুমকি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.