সার্চ কমিটি নিয়ে বলার সুজন কে, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

চট্টগ্রাম ব্যুরো: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সুজন- এরা কারা? সুজন একটি এনজিও। এই এনজিওর সারাদেশে শাখাও নাই, প্রশাখাও নাই। এরা ব্যক্তি বিশেষ নিয়ে একটা এনজিও। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তারা তহবিল সংগ্রহ করে চলে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও তারা একসময় তহবিল নিয়েছিল। যেটি নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সুজন যেভাবে পরামর্শ দিচ্ছে, আর গণমাধ্যমেও কেন এটিকে ফলাও করে প্রকাশ করা হয় সেটিও আমার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটি ১০ জন সিলেক্ট করবে। আইনবলে এটি তাদের ক্ষমতা। সেটি প্রকাশ করবে কী করবে না এটা একান্ত সার্চ কমিটির ব্যাপার। সেটির জন্য সুজন বলার কে? সুজন কি নির্বাচন করে? নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুজন কি এখানে স্টেকহোল্ডার? তাতো নয়। এখানে যারা নির্বাচন করেন তারাই হচ্ছেন স্টেকহোল্ডার। সুজনের এত দাদাগিরি কেন সেটিই আমার বড় প্রশ্ন।
আজ শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এবং যেভাবে অংশগ্রহণমূলকভাবে এবার নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সেটি অভাবনীয়। ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের দেশ ভারতসহ কয়েকশ বছরের পুরনো গণতন্ত্রের দেশেও এভাবে করা হয় না। এখানে সবার সঙ্গে বসা হয়েছে। রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিকদের বিভিন্ন ফোরাম, সুজনসহ যারা টকশো করেন তাদের সঙ্গেও বসা হয়েছে। বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবীরাও সেখানে গেছেন। এরপর যে নামগুলো জমা পড়েছে সেগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অবশ্যই একটি নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে। বর্তমান সরকার গত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিল। সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না, কমিশনের অধীনে হয়। নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীরও একজন কনস্টেবল বদলি করার ক্ষমতা থাকে না। তখন সরকার শুধুমাত্র রুটিন কাজ করতে পারে। সুতরাং বিএনপি যে ধোঁয়া তুলছে নির্বাচনকালীন সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠন করার, সংবিধান অনুযায়ী সেটি করার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উনারা স্বপ্ন দেখেন ষড়যন্ত্রের। কোনো জায়গা থেকে একটা চিঠি আনলে তারা পুলকিত হন। কোনো জায়গা থেকে খালেদা জিয়ার জন্য একটা চিঠি এলে, কাউকে ধরে একটা বিবৃতি আদায় করতে পারলে তারা পুলকিত হন। রিজভী সাহেবরা যেই ঘণ্টা বাজাচ্ছেন, সেই ঘণ্টা তারা বাজাতে থাকুন, জনগণ আমাদের সঙ্গেই আছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি তাদের নয়াপল্টনের অফিসে বসে ১২ বছর আগে থেকে আমাদের সরকারের বিদায়ের ঘণ্টা বাজাচ্ছে। আরও কয় বছর বাজাতে হয় সেটা জনগণ ঠিক করবে। তারা বিদায় ঘণ্টা বাজানো সত্ত্বেও জনগণ গত দুই নির্বাচনে আমাদেরকে নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশে যে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে- আগামী নির্বাচনেও জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ষাটোর্ধ্বদের জন্য পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর একান্তই নিজস্ব চিন্তার ফসল। এটির জন্য বিএনপিসহ কোনো রাজনৈতিক দল কখনো দাবি করেনি। সুশীল সমাজ, রাত বারোটার পর যারা টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন কিংবা যারা সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করেন তারাও বলেননি। এভাবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশকে একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চান।
তিনি বলেন, সরকার বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতাসহ দেশের তিন কোটি মানুষকে নানাভাবে ভাতা দিচ্ছে। বাংলাদেশে স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা আছে, ইউরোপেও এই ভাতা নাই। ষাটোধ্র্ব সবাই যাতে পেনশনের আওতায় আসেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দ্রুত একটি আইন প্রণয়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স.ম.জিয়াউর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.