সাগরে যুদ্ধবিমানটির হদিস পেতে মরিয়া চীন-যুক্তরাষ্ট্র

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে অত্যাধুনিক এফ-৩৫সি যুদ্ধবিমানের একটি নিখোঁজ রয়েছে। সাগরের অতল থেকে বিমানটি তুলে আনতে মারিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটির নৌবাহিনী।
চীন আগে পৌঁছে বিমানটি হাতিয়ে নিতে বেপরোয়া তৎপরতা চালাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে এগিয়ে থাকতে চাচ্ছে বেইজিং। এ কারণেই বিমানটি উদ্ধারে বিশ্বের শীর্ষ দুই পরাশক্তি জোরালো প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
গেল ২৪ জানুয়ারি মার্কিন রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসনে অবতরণের সময় ডেকে ধাক্কা লেগে ১০ কোটি ডলারের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে পাইলটসহ ৬ ক্রু আহত হন। পরে সেটি পানিতে তুলিয়ে যায়। বিমানটি উদ্ধারে খুবই জটিল অভিযানের দরকার পড়বে। যদিও সেটির হদিসও মেলে, তবে তাতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক জঙ্গিবিমান এফ-৩৫সি। রাডার থেকে শুরু করে বিমানটির অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নত প্রযুক্তি অত্যন্ত গোপনীয়। সেসব তথ্য পেতে আগ্রহী চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো।
বিমানটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় বিধ্বস্ত হয়েছে। বিধ্বস্তস্থলে যে আগে পৌঁছাতে পারবে সে-ই জয় পাবে। কারণ, বিমানটি হাতে পেলে তারা পেয়ে যাবেন এটি তৈরির সব গোপন প্রযুক্তির সন্ধান।
চীন এই বিমান পেলে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে একই ধরনের বিমান তৈরিতে সক্ষম হয়ে উঠবে। তবে চীন-রাশিয়ার চোখ ফাঁকি দিতে খুবই গোপনে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যে কারণে জঙ্গিবিমানটি দক্ষিণ চীন সাগরের কোথায় পড়েছে, তা জানায়নি মার্কিন নৌবাহিনী।
কিন্তু সাগরটিতে চীনের নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষীরা অনবরতই পাহারায় থাকে। সেখানে চীনের একচ্ছত্র মালিকানা দাবি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। চীনের প্রভাব মোকাবেলায় ‍যুক্তরাষ্ট্র প্রায়ই দক্ষিণ চীন সাগর এলাকায় নৌবাহিনী মোতায়েন রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন কার্ল সুস্টার বলেছেন, চীন বিমানটির হদিস পাওয়া এবং সাবমেরিন ব্যবহার করে সেটিকে ভালভাবে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করবে। তাছাড়া, দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলের মালিকানা দাবির ওপর ভিত্তি করে চীন বিমানটি উদ্ধারের অধিকার দাবি করতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
এসিয়াটাইমসের খবরে বলা হয়, বিমানটি চীন ও রাশিয়ার গোয়েন্দাদের জন্য দামি গুপ্তধনে পরিণত হতে পারে। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক জশ লসপিনোসো বলেন, এটি একটি উড়ান্ত সুপারকম্পিউটার। বিমানটি ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধ ও গোয়েন্দা মিশন পরিচালনা করতে পারে। পুরো বিমানটি ডিজিটাল উপকরণে ভর্তি।
তিনি বলেন, এ রকম প্রযুক্তি হাতিয়ে নিতে পারলে প্রচুর অতিগোপনীয় উপাদান তাদের নাগালে চলে যাবে। পরে এ ধরনের বিমানের বিরুদ্ধে সহজেই সাইবার হামলা চালাতে পারবে চীনারা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.