সাগরে ইলিশের আমদানী বৃদ্ধি খুশি জেলে ক্রেতা, বিক্রেতা ও

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাট পৌর শহরে সকাল ৬টা থেকে দড়াটানা কেবি বাজার পাইকারী আড়তে ইলিশ বিক্রির জন্য এভাবেই হাকডাক দেন আড়তদাররা। আসেন নিয়ে যান, অল্প দামে বড় মাছ. এদিকে আসেন, এখানে ভালো মাছ।

তাজা ইলিশ কেজি ওজনের মাছের পণ (৮০ পিস) ৫০ হাজার, ৬শ’-৭শ’ গ্রাম ওজনের মাছের পণ মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। আসেন নিয়ে যান। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। তবে জেলার অন্যতম এ ইলিশের পাইকারি বাজারে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ছাড়া।

সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি যেন কেউ জানেনই না। সরেজমিন বাগেরহাট শহরের দড়াটানা নদীর পাশে অবস্থিত ইলিশ ও সাগরের বিভিন্ন মাছের পাইকারি আড়ত কেবি বাজারে গিয়ে দেখা যায় সহস্রাধিক মানুষের ভিড়।

কেউ মাছ দেখছেন, কেউ কিনছেন, কেউ আবার দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন, কেউ বিভিন্ন পরিবহনে মাছ ওঠাচ্ছেন, কেউ আবার ঝুড়িতে বরফ দিয়ে মাছ সাজাচ্ছেন।

আর দড়াটানা নদীতে রাখা ট্রলার থেকে ঝুড়িতে করে রুপালি ইলিশ নিয়ে নির্দিষ্ট আড়ত ঘরের সামনে ঢালছেন বিক্রি করার জন্য। সবাই মহাব্যস্ত। তবে কারও মুখেই মাস্ক নেই।

গেল তিন-চারদিন ধরে এভাবেই কেবি বাজারে ইলিশের আমদানী অনেক বেশি। দাম ও বিক্রি দুই-ই ভালো। ফলে খুশি ক্রেতা, বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও জেলেরা।

কেবি বাজারে মাছ বিক্রি করতে আসা জেলে ননী গোপাল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এবার সাগরে ভালো মাছ পেয়েছি। মাছের আকারও বড়। তাই দামও মোটামুটি ভালো পেয়েছি। তবে আধা কেজি ওজনের ওপরের বেশির ভাগ মাছের পেটে ডিম রয়েছে।

মাছ ব্যবসায়ী লতিফ খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “এবার মাছের চেহারা ও ওজন দু’টোই আগের তুলনায় অনেক ভলো। দুই-তিনদিন ধরে এক কেজি ওজনের একেকটি মাছ ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা এবং ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের মাছ ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মাঝামাঝিগুলো সাড়ে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সুমন হাওলাদার, রিয়াদ হোসেনসহ কয়েক জন মাছ ক্রেতা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন,বাজারে এসেছি। মাছ দেখে পছন্দ হয়েছে। কিনেছি। কিন্তু অনেক ভোরে বাজার শুরু হওয়ায় আসতে একটু কষ্ট হয়। কারও মুখে মাস্ক নেই ও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে দুই-একজন ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে অনেক ভিড়। দাঁড়িয়ে থাকাই দায়।

এর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি আর মাস্ক এসব বাদ দেন। বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. খালেদ কনক বলেন, “ইলিশ রক্ষার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখা হয়। ঝাটকা নিধন রোধেও একাধিক অভিযান করেছি আমরা।

মাছ আহরণের নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সহায়তাও করা হয়েছে। যার ফলে ইলিশের আকার ও আমদানী বৃদ্ধি পেয়েছে সাগর ও নদীতে।

স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ড. মো. খালেদ কনক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমরা মাইকিং করেছি। বাজার সমিতির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে সভা করেছি। স্বাস্থ্যবিধির গুরুত্ব বুঝিয়েছি জেলেদের। তারপরও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ বিষয়ে আমরা আরও কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.