সাগরের পাঁচ হাজার ফুট গভীরে ‘হেঁটে বেড়ানো’ মাছের সন্ধান!

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রথমবার শুনেই হয়তো যে কেউ প্রশ্ন করবেন, মাছ আবার হাঁটে কীভাবে? কিন্তু শুনতে অবাক লাগলেও গভীর সাগরে নতুন এক প্রজাতির মাছের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যেটি হাঁটতে পারে।
এমন তথ্য জানিয়ে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মাছটির গায়ের রঙ টকটকে লাল এবং আকারেও ছোট। আর এটির মাথা থেকে পেট পর্যন্ত অংশটি গোলাকার বস্তুর মতো ফাঁপা। দেহের এই অংশটি অনেকটা হাতে বোনা শালের (চাদর) মতো, পাশাপাশি তা সুইয়ের মতো অসংখ্য কাঁটাযুক্ত।
মাছটির পেট থেকে লেজের অংশটি মাথার তুলনায় বেশ সরু। কাঁটাযুক্ত এই অংশটি সম্ভবত অন্য প্রাণির আক্রমণ থেকে এদের সুরক্ষা দিয়ে থাকে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
তারা বলছেন, এটি এক প্রকার ‘সি টোড’। সি টোড হলো গভীর সমুদ্রের এক প্রকার অ্যাঙ্লারফিশ, যেগুলো তাদের মুখের সামনে ঝুলে থাকা উজ্জ্বল ধরনের এক অঙ্গের সাহায্যে শিকারকে আকৃষ্ট করে থাকে। এই সি টোডটির বিশেষ এক ধরনের পাখনা রয়েছে, যার ওপর ভর করেই সমুদ্রতলে সেটি হেঁটে বেড়াতে পারে। এটি তার শিকারেরও এক ধরনের কৌশল। এছাড়াও, এতে সাঁতারের চেয়ে মাছটির কম শক্তি খরচ হয় বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
সাগরতলে বিজ্ঞানীদের এই অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয় চলতি বছরের শুরুতে। তারা চিলির কাছে প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি অংশে এ অনুসন্ধান চালান। অনুসন্ধানের জন্য পানির নিচে চলাচল উপযোগী একটি রোবটিক যান (আরওভি) পাঠানো হয়। সেই যান সাগরের পাঁচ হাজার ফুটেরও বেশি গভীরে অনাবিষ্কৃত বিষ্ময়গুলোর অনুসন্ধান চালায়।
অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীরা ‘হেঁটে বেড়ানো’ ওই মাছ ছাড়াও জীবন্ত নক্ষত্রপুঞ্জের মতো দেখতে অদ্ভুত এক প্রাণি, কাঁটাযুক্ত লম্বা ও সরু পা-বিশিষ্ট ক্রিমসন ক্রসটেইশান্স (কাঁকড়া জাতীয় প্রাণি), দৈত্যাকার স্পঞ্জ, সামুদ্রিক লিলির ক্ষেত্র, সাগরতলে বসবাসকারী অক্টোপাস ও ১০ ফুট লম্বা ব্যাম্বু কোরালসহ আলো বিচ্ছুরণ করতে পারা আরও বহু প্রজাতির সন্ধান পান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এগুলোকে নতুন প্রজাতি বলেই মনে হচ্ছে।
দলটির প্রধান বিজ্ঞানী ও চিলির ইউনিভার্সিটি অব নর্থের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী হাভিয়ার সেইয়ানস ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে এক ই-মেইল বার্তায় বলেছেন, যদিও সমুদ্রের এই অংশে নতুন প্রজাতির সন্ধান অপ্রত্যাশিত নয়, তবে কয়েক ডজন অদ্ভুত প্রজাতির সন্ধান পাওয়া রোমাঞ্চকর। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.