সরাইলে সেতু নির্মাণের ২৭ বছর পরেও হয়নি সংযোগ সড়ক

বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সেতু নির্মাণের ২৭ বছর পরেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় সেতুটির কোনো সুফল পাচ্ছেন না গ্রামবাসী।
আরএনএমপি-২ প্রকল্পের অধীনে ২৭ বছর আগে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেতুর দু’পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সড়কের মাঝখানে দ্বীপের মতো একাকী দাঁড়িয়ে থাকা সেতু এখন অর্ধলক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে এমন চিত্র দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে সামান্য মাটি দিয়ে দুই প্রান্তের সড়ক মেরামত করা হলেও বছর না ঘুরতেই তা ধুয়ে যায় বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে।
জানা গেছে, সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর এলাকায় ২৭ বছর আগে আরএনএমপি-২ প্রকল্পের অধীনে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। মেসার্স আব্দুল্লাহ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। সেতু নির্মাণের পর দুই পাশের মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও সেটি করা হয়নি। 
চলাচলের বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় সেতুর নিচ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। কেউ কেউ আবার সেতু বেয়ে ওপর দিয়ে চলাচল করেন।
এদিকে, সংযোগ সড়ক না করে সেতু নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সচেতন মহলের দাবি, যেখানে ছোট কালভার্ট করলেই চলতো সেখানে করা হয়েছে বড় খরচের সেতু। তবে সেতু ব্যবহার করার মতো সড়কই নেই। তাহলে এই সেতু কার স্বার্থে নির্মাণ করা হয়েছে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন স্থানীয়দের।
পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আঙ্গুর মিয়া জানান, সেতুটি সংযোগ সড়ক না থাকায় বরইচারা, ষাটবাড়িয়া, হরিপুর ও পরমানন্দপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তির শিকার। সমস্যার সমাধান হলে মাঠের ফসল আনাসহ এলাকাবাসীর অনেক উপকার হতো। অবিলম্বে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে মানুষের চলাচল উপযোগী করার আহ্বান জানান তিনি।
রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী ডেইজি আক্তার জানান, যখন সেতু ছিল না, তখন যেভাবে নৌকায় বা কাদাপানি ভেঙে রাস্তা পার হয়েছি সেতু নির্মাণের পরও একই অবস্থা।
সাত্তার নামে এলাকার এক মুদি দোকানদার বিটিসি নিউজকে বলেন, সেতুর সঙ্গে কোনো রাস্তা বা সড়ক না থাকায় বাজার থেকে দোকানের মালামাল সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নেওয়া যায় না। মাথায় করে বাড়িতে আনতে হচ্ছে।
পরমানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর শিকদার বিটিসি নিউজকে জানান, তিনি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যান। তবে সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় বিকল্প রাস্তায় চলাচল করতে হয়।
এ ব্যাপারে পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বিটিসি নিউজকে জানান, জনগণের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় মানুষ সুফল পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুর রহিম মিয়া বিটিসি নিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না। তবে এখানে নতুন করে সেতুর জন্য সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.