সরকারী ঘরে তালা লাগানোর অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান তাহুর বিরুদ্ধে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রাজবাড়ি গ্রামের আবাসন প্রকল্পের ঘরে তালা লাগানোর অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
রোববার (৪ জুন) বেলা তিনটার দিকে চৌকিদার সহ ইউপি চেয়ারম্যান তাহির তাহুর ৬/৭ জন লোকজন এসে আবাসনের ১৫০ ও ১৫২ নম্বর ঘরে তালা লাগিয়েছে। এবাদে ১৫৮ নম্বর ঘরের লোকজনকে ঘর থেকে বের হতে ২ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
কালীগঞ্জের কাকিনা রাজবাড়ী এলাকায়  প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর পাওয়া ভুক্তভোগী খুশিমন বেগম (৫৫)  অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, দু’দিন পর ছোট মাইয়ার পরিক্ষা। আইজকে মোর ঘরে তালা ঝুলছে। চেয়ারম্যানের কথায় ৫/৬ জন চৌকিদার আসি মাইয়ার বই, ঘরের সব জিনিস-পত্র বাইরে ফেলে দিছে। এখন মুই মাইয়াদের নিয়া কই যামু।
তিনি বলেন, হামরা এই জায়গা গুলাতে মেলাদিন থাকি আছি। প্রায় দের বছর আগে হামার এই যায়গা গুলাতে নাকি প্রধানমন্ত্রী ঘর করি দিবে। এই যায়গা গুলে খাইল আছিলো, মাইয়া দের সাথে নিয়া ১৮/২০ হাজার টাকার মাটি কাটছং। তখনকার ইউএনও বলছিলো তোমরা যার যার যায়গায় সে সে থাকো। তাই আমরা আগে যেখানে ছিলাম এখনো ওখানেই আছি। ঘরের পাশে অনেক কাজও করি নিছি, নতুন করি টয়লেট ও করছি। বাবা হামরা মুর্খো মানুষ, কাগজপত্র কিছু বুঝিনা। দুই মাস হইল ঘরে কাগজ বের হইছে। সেই কাজগে সিরিয়ার ওলট পালট।
আবাসন প্রকল্পের সব লোক বিটিসি নিউজকে বলেন, আমরা সবাই খুব সুন্দর ভাবে ঘরে বসবাস করে আসছি। আমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো সমস্যা নাই। অথচ একদিন দুদিন পর পর চেয়ারম্যান এই সমস্যা করে। আমরা আমাদের আবাসনের যে খানে আছি, সেখানেই থাকবো। এ বিষয়ে যার কাছে যাওয়া দরকার, যেখানে যাওয়া দরকার সেখানেই যাবো।
শফিকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের লোক বাবুকে ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করছে। আমার বাবার বসত ভিটা এটা। এখানে পয়ত্রিক জমি।পরে সরকার জমি নেয়। আমাকে একটি ঘর দেয়। সেই ঘরের কাগজ গায়েব করেছে।
ইউপি সদস্য তুহিন মিয়া বলেন, লোক গুলো অসহায়। এই বিষয় গুলো চেয়ারম্যান আমার সাথে সেয়ার করেন না। লোক গুলো অসহায়।
ইউপি চেয়ারম্যান তাহির তাহুকে ইউনিয়ন পরিষদ এবং একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, ঘরে তালা লাগানো গ্রাম পুলিশ আরিফুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঘরে তালা লাগিয়েছি।১৫২ এবং ১৫৩ নম্বর ঘরে তালা লাগিয়েছি। ওরা ওই ঘরের মালিক নয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, তালা লাগানোর বিষয়টি নজরে আসেনি। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ইউএনও জহির ইমাম বিটিসি নিউজকে বলেন, ঘরে তালা লাগানোর বিষয়টি জানা নেই। ওখানে এক লোকের নামে ঘর বরাদ্দ নেই। কিন্তু সে উঠে পড়েছে। আবার একজন ঘরের বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে ঘরে উঠতে পারছেন না। যাদের বই পত্র ফেলে দিয়ে তালা লাগিয়েছে, তাদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলছি। আগামী কালকের মধ্যেই সুষ্ঠ সমাধান করে দিবো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.