সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে নাটোরে চলছে লক্ষীপুর হাট !

নাটোর প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বারবার গণজমায়েত থেকে দূরে থাকার কথা বলা হলেও, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সপ্তাহে দুইদিন করে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নে লক্ষীপুর হাট বসাচ্ছে ইজারদার ।

প্রতি সপ্তাহে শনি এবং মঙ্গলবার রাত ১০ রাত ৪ টা থেকে ভোর ৭ টা পর্যন্ত একটানা চলা করোনা প্রতিরোধের নিয়ম না জানা গ্রাম থেকে আসা এসব মানুষের জমায়েতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন সচেতনমহল।

বাজারে বিভিন্ন দাম নিয়ন্ত্রণসহ হাট খোলা রাখতে নানা অজুহাত ইজারাদারদের। আশেপাশের সব হাট বন্ধ থাকলেও অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার লোভে সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে হাট বসাচ্ছে।

এনিয়ে নির্দেশ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর কারণ, প্রতিকার ও তার প্রতিরোধের উপায় জানিয়ে নাটোরের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন জুড়ে চলছে মাইকিং, প্রচার প্রচারণা।

অথচ নাটোরের শহরতলীর আশেপাশে বসছে রমরমা হাট। গ্রাম গঞ্জ থেকে এসেছেন অসচেতন শত শত মানুষ। বিশাল দুটি হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়, ধুলো-ময়লা ও গাদাগাদি অবস্থায় চলছে বেচাকেনা। হাঁচি-কাশি, থুতু ফেলা, হাত মেলানা, জড়িয়ে ধরাসহ বন্ধ নেই সংস্পর্শে আসার কোন কিছুই। এতে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণের। তবে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও জীবিকার তাগিদেই এসেছেন বলছেন ব্যবসায়ীরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ করেন, সামাজিক দূরত্ব না মেনে লকডাউনের পুরোটা মাস জুড়ে প্রতি সপ্তাহের শনি এবং মঙ্গলবার দুইদিন নৈশকালীন হাট বসাচ্ছে ইজারাদাররা। আশেপাশের সব হাট বাজার বন্ধ থাকাতে হাটগুলোতে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। বেশ কয়েকটি জেলা থেকে আসছে পাইকাররা। আর হাটে আগতদের সচেতন করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন মেটানো ও বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নেই কোন ব্যবস্থা ।

ক্রেতা ও বিক্রেতারা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমরা আসছি পেটের দায়ে। হাটে না আসলে আমাদের আয় হবে না।

লক্ষীপুর হাটের ইজারদার আমজাদ হোসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেনের সহোদর ভাই । এ হাটটি এতদঞ্চলের মধ্যে কৃষিপণ্যের সবচেয়ে বড় হাট । সামাজিক দূরত্ব না মেনে শত শত মানুষের সমাবেশ ঘটছে এ হাটে ।

নাটোর শহরের পাশেই বিশাল এ জমায়েত ও করোনা ছড়ানোর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের কারণে উদ্বিগ্ন সচেতন মহল। লক্ষীপুর হাটের ইজারাদার আমজাদ হোসেনের মুঠোফোনে কল দিয়েই তাকে পাওয়া যায়নি ।

লক্ষীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমি হাটের ব্যবসায়ী ও ইজারাদারকে সামাজিক দূরত্ব মেনে বেচাকেনা করতে বলেছি । এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমরা সবসময় তৎপর আছি । হাটে লোক সমাগমের বিষয়টি আমি দেখছি ।

সমাজকর্মী সাব্বির হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন ,গ্রামের হাটে এসে হাত মেলাচ্ছে। টাকা নিয়ে গণনা করছে। সামাজিক দূরত্ব এখানে কেউ মানছে না । চেয়ারম্যানের ভাই আমজাদ ক্ষমতার দম্ভে হাট বসিয়ে জোরপূর্বক অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে । তাতে ইজারাদারের লোভের বলি হতে পাারে নাটোরের মানুষ। এই বিষয়গুলো আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাহলেই করোনার সংক্রামণ ঠেকাতে পরব।

নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাঙ্গাঙ্গীর আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে সামাজিক দূরত্ব ঠিক রেখে এবং সীমিত আকারে হাট বাজারগুলো বসাতে বলেছি। কেউ নিয়ম না মানলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।হাটের জমায়েত নিয়ে নির্দেশ পেলেই ব্যবস্থা নিবেন তারা। জনসাধারণের কথা মাথায় রেখে এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আমরা এটা বন্ধ করে দেব।

প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার নাটোর সদর উপজেসার লক্ষীপুর এলাকায় বসে এ হাট।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.