সরকারি চাকরি নয় নাটোর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাষ্টার রোলের নৈশপ্রহরী ফিরোজ কোটি টাকা অঢেল ধন সম্পদের মালিক

নাটোর প্রতিনিধি: নেই কোন নিয়োগপত্র, ভয় নেই চাকুরী হারানোর। অথচ তাঁর দাপটের কাছে অসহায় নাটোর সদর সাব রেজিষ্টার অফিসের দলিল লেখক। বলা চলে সাব রেজিষ্টার অসিম কুমার বণিকের সব অবৈধ লেনদেন কিছু এরাই নিয়ন্ত্রণ করেন ফিরোজ মিয়া।
যদিও দৈনিক ৬০ টাকা মুজুরির চাকরিজীবী তারপরও অনেক সময় দেখা যায় তিনি চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে থাকে অফিসারের মত। কম সময়ে কোটিপতি বনে গেছেন। করেছেন সহায় সম্পদও।
এমনই একজন ফিরোজ হোসেন নাটোর সদর সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের দৈনিক ৬০ টাকা বেতনের নৈশপ্রহরী। চলাফেরা দেখলে মনে হবে কোন বড় কর্মকর্তা। সেবাপ্রার্থীরাও তাই ভাবে।
যদিও তার দায়িত্ব রাতে কিন্তু তাকে দেখা যায় এজলাস চলাকালিন সময়ে সাব-রেজিষ্ট্রার অসীম কুমার বণিকের ঠিক ডান পাশে। সেখান টেবিলে ভর করে দাঁড়িয়ে থেকে কি এমন কাজ করেন আর কেনই বা সাব-রেজিষ্ট্রার একজন নৈশপ্রহরীকে এত ঘনিষ্ঠ ভেবে প্রশ্রয় দেন প্রশ্ন জনমনে? জানা গেছে, সাব-রেজিষ্ট্রারের ঠিক ডান পাশে একই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতো সরকারি বেতনভুক্ত অফিস সহকারী।
সম্প্রতি কৌশলে ব্যক্তিগত দাপট আর প্রভাব খাটিয়ে তাকে সরিয়ে সেই জায়গা দখল করেছে ফিরোজ ।নেই কোন নিয়োগপত্র, ভয় নেই চাকুরী হারানোর। অথচ তার দাপটের কাছে অসহায় সাধারণ মানুষ ও দলিল লেখক। বলা চলে সব কিছু সেই নিয়ন্ত্রণ করে।
যদিও দৈনিক ৬০ টাকা মুজুরির চাকরিজীবী তারপরও অনেক সময় দেখা যায় তিনি চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে থাকে অফিসারের মত। অল্প সময়ে তিনি বনে গেছেন কোটিপতি বনে গেছেন। করেছেন সহায় সম্পদও।
দলিল সম্পাদন, বালাম বহির অনাধিকার চর্চা আর তল্লাশী প্রতিবেদনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দাবিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে নৈশপ্রহরী ফিরোজের বিরুদ্ধে। তার কথাবার্তায় মনে হয় দাপ্তরিক কার্যক্রম যেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এমন একটি ভিডিও ক্লিপও পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, বালাম বহি বের করে কলম হাতে কি যেন খুঁজেই চলছে অভিযুক্ত ফিরোজ। ভ্রুক্ষেপ নেই সেবা গ্রহিতাদের দিকে।
যদিও নির্দেশনা নেই অফিস চলাকালিন এই বালাম বহি পর্যবেক্ষণের। এছাড়া দলিল সম্পাদনের আগে কর্মচারী না হয়েও সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কুমার বণিকের পক্ষে মহরীদের থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন। কোন দলিল লেখক টাকা কম দিলেই সে অপমান করে।
বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রারের আস্থাভাজন হওয়ায় তার সব দুর্নীতি ও আন্ডারভ্যালু দলিলের টাকা ফিরোজের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। সে থেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান ফিরোজ। দুই দিন পর পর বাইকের মডেল পরিবর্তন করে। কম সময়ে তিনি একাধিক বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে যান। তবে এখনও থেমে নেই তার দুর্নীতি।
বাড়ি ও জমি রয়েছে। রয়েছে ব্যাংক ব্যালেন্সও। যার সবই দুর্নীতির মাধ্যমে রোজগার করা টাকার। কিন্তু চতুর ফিরোজ নিজ ও পরিবার সদস্যদের নামে সব সম্পত্তি করেছেন। নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পাশে কান্দিভিটুয়ায় এলাকায় ভাড়া থাকেন।
বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক দলিল লেখক জানান, নাটোর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে পান দোকানী ফিরোজের দুলাভাই বেকার শ্যালককে নৈশপ্রহরীর দৈনিক চাকরিটা নিয়ে দেন। প্রথমে কয়েকদিন রাতে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার অসীম কুমার বণিক যোগদানের পর কপাল খুলে যায় ফিরোজের। ফিরোজ মাধ্যমে সকল প্রকার লেনদেন শুরু হয়।
তিনি টাকা বুঝে পেয়ে সিগন্যাল দিলে সাব রেজিস্ট্রার দলিলে স্বাক্ষর করে। একটি বাটোয়ারা দলিল সম্পাদন করতে দলিল লেখকদের দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। টাকা কম দিলে বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাদের উপর গালিগালাজ এবং খারাপ ব্যবহার করে।
নাটোর সদর-সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অসীম কুমার বণিক যোগদানের পর দীর্ঘদিন যাবৎ প্রকাশ্যে দুর্নীতি ও লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বানিজ্য চলে আসছে ফিরোজের মাধ্যমে। নাটোর সদর-সাব রেজিষ্ট্রার অসীম কুমার বণিকের ছত্রছায়ায় এবং যোগসাজেসে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ফিরোজ নামের সেই নৈশপ্রহরী।
এছাড়াও ফিরোজের নেতৃত্বে একটি চক্র সংঘবদ্ধ সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি-অনিয়ম ও হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছে। নাটোর সদর-সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা না হয়েও ভুয়া কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে দলিল করতে আসা সাধারন জনগনের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অপরদিকে সরকারী কর্মকর্তা না নৈশ প্রহরী হয়ে সরকারী কর্মকর্তার প্রভাব দেখাচ্ছে। অসিম কুমার বনিক প্রতি সপ্তাহে বিমানে যাতায়াত করেন। গত এক বছর ধরে বিমানের টিকেট কাটাসহ রেন্ট কারে তাকে রাজশাহী বিমানবন্দরে পৌচ্ছে দেয়া এবং ঘুষের বিশাল অংকের টাকা সাব রেজিস্ট্রারের ঢাকার বাসায় পৌচ্ছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন এই ফিরোজ।
নাটোর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে অসীম কুমার বণিক যোগদানের পর ফ্রি ষ্টাইলে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। কেউ প্রতিবাদ ফিরোজ তাকে অপমান এবং লাঞ্চিত করে। এসব অবৈধ কর্মকান্ড ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী, নাম সর্বস্ব পত্রিকার সাংবাদিকদের হাত করা আছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সাব রেজিস্ট্রার অসীম কুমার বণিক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার অফিস ঘুষ দূর্ণীতিমুক্ত।। ফিরোজ আমার অফিসের মাষ্টাররোলের নৈশপ্রহরী। সে কেন আমার অফিসে নাম দিয়ে লেনদেন করবে। অভিযোগ পেলাম আমি ব্যবস্থা নেব। অভিযুক্ত নৈশ প্রহরী ফিরোজ বলেন, আমি কোন লেনদেনে জড়িত না। সাব রেজিস্ট্রার স্যারের ফুটফরমাশ শুনি।। আমার বিরুদ্ধে লিখে লাভ নেই।।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.