সব মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জেলার ১৬টি অভ্যন্তরীণ সড়কে যন্ত্রচালিত চলাচল বন্ধ ঘোষণা

বাগেরহাট প্রতিনিধি: ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় করোনা রোগী সনাক্ত হওয়া ওই সকল জেলার কর্মরত বাগেরহাটের বাসিন্দারা এলাকায় ফেরার চেষ্টা করছেন। তাদের প্রবেশ ঠেকাতে বাগেরহাটের সবকটি সীমান্ত পথ দিয়ে সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারী করেছে জেলা প্রশাসন।

বাগেরহাট জেল বাসীকে করোনা মুক্ত ও তাদের আগাম স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন এই উদ্যোগ নিয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে বলে ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কর্মরত বাগেরহাট জেলার বাসিন্দারা গোপণে প্রবেশ করতে পেরেছে কিনা তার তথ্য পুলিশের কাছে নেই।
এপ্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগেরহাট গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএসবি) একাধিক কর্মকর্তা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে লক ডাউন করে দেয়ার পর থেকে আমরা জেলাজুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছি। এই জেলার যারা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কর্মরত আছেন তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তবে কি পরিমাণ মানুষ ওইসব জেলাতে কর্মরত আছেন তাদের পরিসংখ্যান আমাদের হাতে নেই। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে থেকে কিছু মানুষ ফিরেছে বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে। আমরা সেই খবরের ভিত্তিতে সেসব এলাকায় যেয়ে এখনো কাউকে খুঁজে পাইনি।

অন্যদিকে, বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্থানীয় মানুষদের ঘরবন্দি রাখতে প্রশাসন কঠোর হচ্ছে। জেলার ১৬টি অভ্যন্তরীণ সড়কে মোটর সাইকেল, অটোরিকসাসহ সকল যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত এক মাসে জেলায় কোন করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হয়নি।

এই জেলার মানুষদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে প্রশাসন এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অতিপ্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে অযথা ঘোরাঘুরি করলে তাদের বুঝিয়ে ঘরে পাঠাচ্ছে। কথা না শুনলে করা হচ্ছে জরিমানা। গত ১০ দিনে এই জেলায় সামাজিক দুরত্ব না মানায় প্রায় তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বাগেরহাটের সাধারণ মানুষদের ঘরবন্দি রাখতে জেলায় ৩০টির অধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় টহল জোরদার করেছে। শহর, পাড়ামহল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় ওই সকল জেলার কর্মরত বাগেরহাটের বাসিন্দারা এলাকায় ফেরার চেষ্টা করছেন। তাদের প্রবেশ ঢেকাতে বাগেরহাটের সবকটি সীমান্ত পথ দিয়ে সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে বলে জানান ওই শীর্ষ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, গত এক মাসে এই জেলায় কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এটা আমাদের জন্য সুসংবাদ। এই অবস্থা ধরে রাখতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। বাগেরহাটের সব মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে মোটরসাইকেল, অটোরিকসা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া জেলায় ঢোকার মূল প্রবেশ পথ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের নওয়াপাড়া এবং বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের মহিষপুরা এলাকায় বাইরের মানুষদের না ঢুকতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আমরা যদি সব মানুষকে ঘরবন্দি রাখতে পারি তাহলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রেহাই পাব। এই জেলার মানুষদের মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।

জেলায় ৩০টির অধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে। এরপরেও যদি অতিপ্রয়োজন ছাড়া কেউ অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। গত ১০ দিনে এই জেলায় সামাজিক দুরত্ব না মানায় প্রায় তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.