সন্ধ্যা ৭টার পর ফোন দেওয়া যাবে না বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টরকে, সাংবাদিককে নিষেধাজ্ঞা


বশেমুরবিপ্রবি (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কোন শিক্ষার্থীর যাই হোক প্রক্টর ড. রাজিউর রহমানকে সন্ধ্যা ৭ টার পর ফোন দেওয়া যাবে না বলে দেশ রুপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শাফিউল কায়েসকে সোমবার রাত ১১টার দিকে মুঠোফোনে কথা বলার সময় তিনি এ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
এদিকে, সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শেখ শাকিল নামের এক শিক্ষার্থীকে টিউশনি প্রদানের আশ্বাস দিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মল্লিকের মাঠ নামক এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনাটিকে প্রক্টর ড. রাজিউর রহমানকে ফোন দিলে তিনি সামান্য ঘটনা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ দিন সাংবাদিকতা করে এসেছি। তুমি কি রাত ১১ টায় আমাকে কল দিতে পারো? তুমি আর কখনো সন্ধ্যার পর কখনো কল দিবে না বলে তিনি তাকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাকিলকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের ঘটনা সেই ধরনের ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী মারা গেলেও কি আপনাকে ফোন করা যাবে না রাত ১১ টায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে সন্ধ্যার পর এই সংবাদকর্মীকে ফোন দিতে নিষেধ করেন তিনি।
আহত শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, তাকে মারধর সহ বিভিন্ন রকমের মানসিক প্রেসার দিয়ে বাড়ি যোগাযোগ করতে বাধ্য করা হয়। এমনকি অপহরণকারীরা তার মা বাবা কে বলেন, তোর একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে হলে ৩০,০০০ টাকা দিতে হবে। অন্যথায় তোকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন।
পরবর্তীতে তার পারিবারিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তার খালাতো ভাই বিকাশের মাধ্যমে দুই ধাপে টাকা পাঠালে তাকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে এক অটোযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স ড্রারাইভারকে কে ফোন দিলে তিনি শহরে অবস্থান করছে বলে জানান।
এম্বুলেন্স সময় মতো পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান ইমন বলেন, এম্বুলেন্স সময় মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পায়না এটি নতুন কিছু নয়। ইতিপূর্বে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলেও এম্বুলেন্স সময় মতো পায়নি। শুধু এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেই নয়  যেকোনো বিভাগের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলেও এম্বুলেন্স পায়না বলে অভিযোগ আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুস্তাসিম বিল্লাহ হৃদয় বলেন,  প্রভোস্ট, প্রক্টর, ভিসি পদগুলো সত্যিই অনেক লোভনীয়। কেউই ছাড়তে চায় না নইলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি দের স্বৈরাচারীতা দৃশ্যমান। ঠিক তেমনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। উচ্চ আসনের মানুষ গুলো যতদিন শিক্ষার্থীদের কাছে আদর্শ হতে পারবে ততদিন জাতি ভালো কিছু পাবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার তিনি কখনও পদে থেকে মেজাজ হারায়ে হলেও কথা বলতে পারেন না যে ৭ টার পর স্টুডেন্ট মারা গেলেও তাঁকে ফোন দেওয়া যাবে না।
বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাইনুউদ্দিন পরান বলেন, বিষয়টি দুঃখজক। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং ডেকে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বশেমুরবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কে.এম.ইয়ামিনুল হাসান আলিফ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে মাঝরাতেও ফোন দিতে পারে। তিনি ব্যস্ত থাকলে ফোন ধরবেন না কিংবা ফোন ধরে বলতে পারেন ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো। কিন্তু ফোন ধরে আমাকে (প্রক্টরকে) সন্ধ্যার পর ফোন দেয়া যাবে না আমার মনে হয় যে প্রক্টরের দায়িত্বশীল আচরণ না। প্রক্টরের অনেক দায়িত্ব, তিনি যদি সন্ধ্যার পর ফোন ধরতে না পারে, তবে আমার মনে হয় উনার প্রক্টরের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া উচিত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.