সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল : আইজিপি

বিটিসি নিউজ ডট কম ডট বিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ (উগ্রবাদ) দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। তিনি বলেন, হোলি আর্টিজনে হামলার খুব অল্প সময়ে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি; যেভাবে ১৯৭১ সালে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। এরপর থেকে দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ যে ভূমিকা পালন করেছে তা বিশ্বের কাছে বিস্ময়।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন। রাজশাহী মেট্রোপলিট পুলিশ (আরএমপি) এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে প্রধান বাধা মাদক ও জঙ্গিবাদ। এ সমস্যা বর্তমানে আমাদের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শুধু কোন পুলিশি সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক সমস্যা। এই সমস্যাকে রুখে দিতে হলে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, আপনাদের সহযোগিতা পেলে জঙ্গিবাদ ও মাদককে আমরা বাংলাদেশ থেকে অচিরেই নির্মূল করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, তরুণেরা হতাশার কারণে সন্ত্রাসবাদের দিকে ঝুঁকছে, মাদক নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এসব থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। এজন্য শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে একজন করে কাউন্সেলর রাখা প্রয়োজন। যেন কোন শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্থ হলে যথাযথ পরামর্শ পায় এবং বিপথে না যায়।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, জঙ্গিবাদ আমরা যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, তা বিশ্বের অনেক দেশের জন্য শিক্ষনীয়। আমাদের শক্তির উৎস হলো আমাদের জনগণ। কারণ জনগণই জঙ্গিবাদ বিষয়ে তথ্য দিয়ে, ধরিয়ে দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
আইজিপি বলেন, আপনারা দেখেছেন বাংলাদেশ পুলিশের সেই সব রক্তক্ষয়ী যোদ্ধা যারা হোলি আর্টিজনে প্রাণ দিয়েছিলেন। বেশ কয়েকজন অকুতোভয় যোদ্ধাকে হারিয়েও আমরা থেমে যাইনি। আপনাদের সবার সহযোগিতায়, জনগণের সহযোগিতায়, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতায় আমরা তাদেরকে রুখে দিয়েছি। যেমন করে আমরা রুখে দিয়েছিলাম পাক হানাদার বাহিনীকে।
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম. খুরশীদ হোসেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, রাবি স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি সুমাইয়া রহমান কান্তি ও আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু জাকি আল মুনজির। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদাকাত মাহমুদ ও মেহজাবিন কথা। সমাবেশে সমবেত কণ্ঠে কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদককে না বলেন।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম. খুরশিদ হোসেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, একটা আন্তর্জাতিক চক্র জঙ্গিবাদ দিয়ে, মাদক দিয়ে আমাদেরকে পেছনে টানার চেষ্টা করছে। তাই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তোমাদের প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে তোমাদের মধ্যে কতটুকু দেশপ্রেম থাকা উচিৎ এবং সাধারণ মানুষের কীভাবে উপকার করা যাবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, জঙ্গিবাদকে মোকাবিলা করা শুধুমাত্র পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। টেরোরিজমকে কাউন্টার করার কাজটা আমাদের, বাকি কাজটা আপনাদের। শিক্ষক, ইমাম, জনপ্রতিনিধি সবারই দায়িত্ব আছে, যারা ভুল পথে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনা। এই মাদক থেকে কেউ মুক্ত নয়। আপনাদের মধ্যে যেমন মাদকসেবী আছে, তেমনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যেও আছে। আমরা এই অপবাদ থেকে মুক্ত হতে চাই। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.