সত্যিই কি আরেকটি অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রীলঙ্কার জনগণ?

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চরম অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ায় চলতি বছরের শুরুর দিকে বিক্ষোভ শুরু হয় এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়। উত্তাল হয়ে ওঠে দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে গোটা দেশের জনগণ।
পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয় যে, গত ৯ জুলাই শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন। এর কিছুক্ষণ আগে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এর কয়েক দিনের মাথায় তিনি দেশত্যাগ করেন। গণবিক্ষোভের মুখে ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে প্রথম মালদ্বীপে যান গোটাবায়া। পরদিন মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যান তিনি। সিঙ্গাপুরে গিয়ে তিনি তার পদত্যাগপত্র দেশে পাঠিয়ে দেন। ১৫ জুলাই তার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার।
সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ডে যান গোটাবায়। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি। গোটাবায়া যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তখন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও রাজনীতিকদের একটি দল তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
এদিকে, গোটাবায়ার পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তার আস্থাভাজন রনিল বিক্রমাসিংহে।
এবার এই রণিল বিক্রমাসিংহে ক্ষমতাচ্যুত করতে আরেকটি অভ্যুত্থানের জন্য শ্রীলঙ্কার জনগণ প্রস্তুত হচ্ছে বলে দাবি দেশটির সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য এবং সমাজি ভানিথা বলভেগেয়া পার্টির প্রধান হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র।
শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পরিণতি সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের চেয়েও ভয়ঙ্কর হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ইঙ্গিত দেন হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র।
সংবাদ সম্মেলনে হিরুনিকা বলেন, “শিগগিরই রনিলকে বিদায় নিতে হবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের চেয়েও তার বিদায় অনেক বেশি আতঙ্কের হবে। তাকে দ্রুতই ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এবং জেলে যেতে হবে।”
তিন বলেন, “অসহায় মানুষেরা প্রধান প্রধান ব্যবসায়ীদের বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দেবে। সহায়সম্বলহীন গরিব মানুষেরা ধনীদের সম্পদ দখল করবে। ইতোমধ্যে ধনীদের মালিকানাধীন সম্পদের দখল শুরু হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে বাট্টারামুল্লাতে এক ধনী ব্যক্তির বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
এ সময় বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেমালাল জয়সেকেরার নিয়োগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি এ জয়সেকেরাই এক সমাবেশে ইউএনপি সমর্থক দোদানগোদাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। ইউএনপি কীভাবে তাকে মন্ত্রী করার পদক্ষেপ মেনে নিল?
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বিরোধী নেতা সাজিদ প্রেমাদাসার দল সমাজি জন বলভেগেয়ার নারীবিষয়ক অঙ্গসংগঠন সমাজি ভানিথা বলভেগেয়া। হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র–এর নেতৃত্বে আছেন। (সূত্র: ডেইলি মিরর এলকে, আইল্যান্ড এলকে)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.