সকল শহীদের স্মরণে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে উদযাপন করা হয় স্বাধীনতার প্রথম প্রহর

বিশেষ প্রতিনিধি: স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ করেছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার বাহিনীর হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে রাজারবাগে শহীদ হয়েছিলেন অনেক বীর সাহসী পুলিশ সদস্য। সকল শহীদের স্মরণে প্রতিবছর ২৫ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে উদযাপন করা হয় স্বাধীনতার প্রথম প্রহর।
প্রতিবারের মতো ২৫ মার্চ, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপন অনুষ্ঠানে রাত ১২-টা ০১ মিনিটে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্মৃতিস্তম্ভে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। আলোচক ছিলেন, মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম, ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার), ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপন অনুষ্ঠানে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত সব পুলিশ সদস্য এবং সব শহিদ মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এসময় আইজিপি বলেন, বাঙালি জাতিকে হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে একজন বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে যে আলোক শিখা প্রজ্বালন করে দিয়ে গেছেন তা আজও জ্বলছে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে রাজারবাগে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। রাজারবাগ আজও প্রতিরোধের সেই দ্যুতি ছড়ায়।
আইজিপি আরও বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের প্রথম বুলেট নিক্ষেপ করেন পুলিশ সদস্যরা। সেই বীর পূর্বসূরীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিবছর ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপন করে থাকে।
মাহবুব উদ্দীন বীর বিক্রম তাঁর বক্তব্যে বলেন, পুলিশ বাহিনী রাজারবাগে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, সে তরঙ্গ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। সারা দেশের মানুষ তাঁদের প্রতিরোধের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের অহংকার করার মতো যে অতীত আছে, সেটিকে বুকে ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশকে গড়ে তুলতে হবে।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে পুলিশ। এখনও বাংলাদেশ পুলিশ দেশ বিরোধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত রুখে দিতে কাজ করছে।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, শুধু রাজনীতির ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধুর বিশাল ভূমিকা ছিল।
বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাব এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপন অনুষ্ঠানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নীরবতা পালন করেছেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দরা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.