সংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে : আসাদুজ্জামান নূর
নওগাঁ প্রতিনিধি: জিপিএ-৫ কে নির্যাতন নামে আখ্যায়িত করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্যেশে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেছেন, সংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে। যে ভাল করছে তার দিকে সবার নজর। আর যে পেছনে তার দিকে আমরা খেয়াল রাখিনা। পেছনের ওরা কেন পারছেনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখ সমাধান করতে হবে। তাহলে তারাও এগিয়ে যাবে। আমরা ক্লাশের মধ্যে বাচ্চাদের আটকে রেখেছি। তাদের কবিতা পড়া, গান শেখা ও খেলাধুলা করার সময় হয়ে উঠে না।
স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ’ এর ২৫ তম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে শনিবার বিকেল ৩টায় নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আগের সময় দরিদ্র শিক্ষকরা আমাদের ধনী করেছেন। আর বর্তমান শিক্ষকরা ধনি হচ্ছে, আর শিক্ষার্থীরা হচ্ছে গরীব। সরকার সবকিছু একাই করতে পারেনা। যদি না আপনারা সহযোগীতা না করেন। আমরা মানবের সমাজ গড়তে চাই।
এ সময় একুশের পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের হুইপ অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান সরকার এমপি, নওগাঁ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, পরিষদের উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, ডাক্তার ময়নুল হক, বিন আলী পিন্টু, রফিকুদ্দৌলা রাব্বি, নাইচ পারভিন, বিষ্ণ কুমার দেবনাথ, সাধারন সম্পাদক এমএম রাসেল, ২৫ বছর পূর্তি উৎসব প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন লিটনসহ প্রমূখ।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে ভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারী ড. জোহা দিবস পালনের মাধ্যমে সংগঠনটি যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে ওই দিনটিই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হিসেবে পালন করা হয়। শুরুতে সংগঠনটি ‘একুশে উদ্যাপন পরিষদ নওগাঁ’ নাম ছিল। পরিবর্তীতে উদ্যাপন শব্দটি বাদ দিয়ে ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’ নামকরণ করা হয়। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে মূল চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আর্দশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নিরলসহীন ভাবে।
নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষে নওগাঁর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাষাসংগ্রামী এবং বিভিন্ন বধ্যভূমি খুঁজে বের করা। প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩৫টির বেশি বধ্যভূমি আবিষ্কার করেছে এ সংগঠন। কিছু বধ্যভূমিতে নিজ অর্থায়নে স্মৃতিফলক তৈরি করেছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন গণহত্যা দিবস। ভাষা সংগ্রামী সহ বিশিষ্ট গুণিজনদের জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকী আলোচনা ও স্মরণ সভা সহ সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক অবক্ষয় ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়। পরিষদের এসব প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখতে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছে বিশিষ্ট জন সহ সকল শ্রেনীর মানুষ।
সংগঠনটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী নানান কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে সকালে উদ্বোধনের পর দলীয় কণ্ঠে জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশন, শপথবাক্য পাঠ, আনন্দ শোভাযাত্রা, স্মৃতি চারণ। বিকেলে নওগাঁ জেলার গণহত্যার সংক্ষিপ্ত ইতহাস বই-এর মোড়ক উন্মোচণ, ব্রতচারী নৃত্য, নৃত্যানুষ্ঠা।
পরিষদের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল বারী বলেন, মুক্তিযোদ্ধার আদর্শে আমাদের পথ চলার পাথেয়। আমরা গত ২৫ বছর থেকে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে কাজ করছি। ৪৪ জন মুক্তিযোদ্ধা সহ কয়েকজনকে সম্মাননা দিয়েছি। ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছি। এরমধ্যে- বৃক্ষরোপন, নৌকা বাইচ, পানিতে ডুব প্রদর্শনী, আর্ট ক্যাম্প, লাঠি খেলা, আলকাপের গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্রতচারী নৃত্যসহ নানান আয়োজন করেছি।#
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.