সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভারতের ধনী ও বলিউড অভিনয়শিল্পীদের মালদ্বীপে আশ্রয়

(সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভারতের ধনী ও বলিউড অভিনয়শিল্পীদের মালদ্বীপে আশ্রয়–ছবি: সংগৃহীত)
বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন ও আইসিইউয়ের তীব্র সংকট যেমন আছে তেমনি ভাইরাসে মৃতদের যথাযথ সৎকারে খেতে হচ্ছে হিমশিম। সাধারণ মানুষের জীবনে যেন এক বিপর্যয় নেমে এসেছে। এরকম এক পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের ধনী ও বলিউড অভিনয়শিল্পীরা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মালদ্বীপের রিসোর্ট ও হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মালদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রণালয় সবরকম পর্যটকদের প্রবেশ ও বহির্গমন নিষিদ্ধ করেছে। যার কারণে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভারত হতে সেখানে কেও যেতে পারছে না। এছাড়া গত ১৪ দিনের মধ্যে সেখানে যেসব পর্যটক গিয়েছেন তারাও নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন না। ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদ্বীপ কর্তৃপক্ষ।
গত বছর সংক্রমণ কমায় পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো মালদ্বীপ। মহামারি শুরুর পর অন্যদেশের নাগরিকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার মধ্যে যা প্রথম ঘটনা।
সিএনএন জানায়, সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর গত কয়েক সপ্তাহে ভারতীয় ধনকুবের ও বলিউড অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের জন্য মালদ্বীপ খুব জনপ্রিয় একটি স্থানে পরিণত হয়েছে। এর অন্যতম কারণ তারা ভারতের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষায় মালদ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। মার্চের মধ্যভাগ থেকেই তারা ভারত ছেড়ে সেখানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। সেখানে অবস্থানরত বলিউড শিল্পীদের মধ্যে আলিয়া ভাট, শ্রদ্ধা কাপুর, দিশা পাটানি ও জানভি কাপুর উল্লেখযোগ্য।
চলতি বছর ভারতীয়দের অন্যতম পছন্দের স্থানে পরিণত হয়েছে মালদ্বীপ। জানা যায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ভারতীয় নাগরিক মালদ্বীপে এসেছেন। এপ্রিলে এই ভ্রমণ খরচ কয়েকগুণে বেড়ে যায়। ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও দেশটির ধনীরা বিমানে করে মালদ্বীপে পৌঁছেছেন।
ভারতের এক বেসরকারি বিমান সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজান মেহরা জানান, এপ্রিলে ভারত হতে মালদ্বীপের ফ্লাইটের টিকিট মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কেউ কেউ চার্টার্ড বিমান ভাড়া করেও দেশ ছেড়েছে। আবার অনেকে ৫৫ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি টিকিট কেটে মালদ্বীপ গিয়েছে।
এপ্রিলের শুরুতে একাধিক বলিউড শিল্পী তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মালদ্বীপের নয়নাভিরাম দৃশ্য শেয়ার করেছেন। এর জন্য পরে তাদের বেশ সমালচোনার মুখে পড়তে হয়েছে। নেটিজেনদের দাবি, করোনাভাইরাসের মহামারিতে যখন বিপর্যস্ত ভারতের সাধারণ মানুষ, সেই সময়ে টাকা অপচয় করে ঘুরতে যাওয়ার ছবি শেয়ার করা কি যৌক্তিক?
তারা যে শুধু নেটিজেনদের সমালচোনার মুখে পড়েছেন এমন না। ভারতে অবস্থান করা অনেক বলিউড শিল্পী তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদেরই একজন নেওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। গুণী এই অভিনেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব এখন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের ঘরে খাবার নেই। অথচ কিছু মানুষ টাকা উড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.