শ্রীলঙ্কায় পুড়ছে এমপি-মন্ত্রীর বাড়ি, কারফিউ জারি

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্কশ্রীলঙ্কায় চলমান বিক্ষোভ-সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের একাধিক এমপি ও মন্ত্রীর বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সোমবার (০৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানী কিগালি এলাকায় এমপি মহিপালা হেরাথের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের করুনাগালার বাড়িতে ও সাবেক মন্ত্রী নিমাল লানজার আগুন দেওয়া হয়।
এছাড়াও দেশটির রাজধানী কলম্বোর মাউন্ট লেভিনিয়ায় সাবেক মন্ত্রী জনস্টন ফারনান্দো ও এমপি সনাথ নিশান্থার বাড়িতে হামলা চালানো হয় ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর খবরে এমপি সনাথও সাবেক মন্ত্রী জনস্টনের বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। তাদের অভিযোগ, মাহিন্দা পদত্যাগ করার পরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর আক্রমণ চালায় শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। এরপরেই পাল্টা মারমুখী হয়ে শাসকদলের নেতাদের উপর হামলা চালানো শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।
এদিন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশটিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সরকারপন্থী ও সরকারবিরোধীদের মধ্যে ভয়াবহ এই সংঘর্ষে এক এমপিসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও শতাধিক বিক্ষোভকারী। সহিংসতা বন্ধে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় চলমান আন্দোলনের মুখে সোমবার পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি পদত্যাগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক চান্না জয়সুমানাও। তাদের এই পদত্যাগের মধ্যদিয়ে নতুন মন্ত্রিসভাও ভেঙে গেছে।
এদিন রাজধানী কলম্বোয় সরকারবিরোধীদের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিক্ষোভস্থলে হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর আসে।
হামলার আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ক্ষমতাসীন দলের একদল সমর্থক জড়ো হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। এরপর প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এই বৈঠক শেষ করে মিছিল করে গিয়ে প্রেসিডেন্ট দপ্তরের সামনে অবস্থানরত সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় তারা।
সরকার সমর্থকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি ও লোহার পাইপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয় এবং আহত হয় আরও শতাধিক। এরপর হামলাকারীদের সেখান থেকে সরাতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন কলম্বোর কাছের নিত্তামবুয়া এলাকায় এমপি অমরাকীর্তি আথুকোরালার বহনকারী গাড়িটি বিক্ষোভকারীদের সামনে পড়ে। আন্দোলনকারীরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি গুলিবর্ষণ করেন। এতে দুইজন গুরুতর আহত হলে এক পর্যায়ে তিনি একটি ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে সেখানেই তার মরদেহের সন্ধান মেলে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.