শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ার শক্তি কারও নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন গোটা বিশ্ব রোল মডেল হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেবে—এই শক্তি কারও নেই। তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই এই দেশে আর কাউকেই অরাজকতা করতে দেওয়া হবে না। সামনে নির্বাচন আসছে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন বিধি আছে, সেই বিধির বাইরের কোনও প্রস্তাব শেখ হাসিনা গ্রহণ করবেন না।’
রবিবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) অডিটরিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন দেশের মানুষের উন্নতির জন্য। দেশের মানুষের স্বস্তিতে থাকবার জন্য। কারণ, তিনি জাতির পিতার কন্যা, তিনি জাতির পিতার আদর্শে গড়া মানুষ। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর দেশের পরিচালনায় ছিলেন। এই অল্প সময়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, বিসিপিএস, বিএমআরসি প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদাসহ স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর সূচনা করে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন, আমাদের এখন আর কী কী কাজ করতে হবে। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার আদর্শকে ধারণ করে দেশের মানুষের চিকিৎসাসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের প্রায় ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করছেন। অথচ বিএনপি-জামায়াত সরকার দেশের সাধারণ মানুষের জন্য করা বিশেষ এই সেবাটি বন্ধ করে দিয়েছিল। নতুন করে ৫টি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭টি মেডিক্যাল কলেজ, ২২টি চিকিৎসা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি জেলায় বেড সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছেন। জেলা হাসপাতালগুলোতে অতি জরুরি ১০টি করে ডায়ালাইসিস সেন্টার করেছেন। উপজেলা হাসপাতালে বেড বৃদ্ধি করা হয়েছে। চিকিৎসা খাতে আগামীর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ক্যানসার, কিডনি, লিভার-চিকিৎসা খাতে মানুষ যাতে ঢাকায় না এসে নিজ বিভাগেই নিতে পারে, সেজন্য দেশের ৮ বিভাগেই ৮টি অতি উন্নত ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ১৫ তলা ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণকাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এর পাশাপাশি আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের মা ও শিশুদের জন্য আলাদা করে সেবা দেবার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘দেশের কয়েকশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইতোমধ্যে প্রসূতি মায়ের জন্য ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব দ্রুতই দেশের প্রতিটি জেলায় ৩০-৫০ বেডের আলাদা করে মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এটি করা গেলে দেশের মায়েদের প্রসবকালীন যে সমস্যা ও অর্থ ব্যয় হয়, তা অনেক কমে যাবে।’
শিশু দিবস উপলক্ষে শিশু শ্রম ও বাল্যবিয়ে বন্ধের আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অনেক দোকানে, কলকারখানায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শিশুদের বয়সে শিশুরা খেলাধুলা করবে, আনন্দ করবে। সেখানে শিশুদের যেভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, তা অমানবিক। অপরদিকে, বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সরকার নানারকম প্রচারণা ও উদ্যোগ নিলেও বাল্যবিয়ে অহরহ ঘটছে। বাল্যবিয়ে মানে একজন অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলেমেয়ের বিয়ে। এই বয়সে বিয়ে হলে তারা যেখানে নিজেরাই শিশু থাকে, সেই শিশুদের মধ্যে আরেক শিশুর জন্ম হয়। এতে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীর বাংলাদেশে সুস্থ-সবল বুদ্ধিমান শিশু হতে হবে। সে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যসেবার কাজ করছি। এখন শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে সব জায়গাতেই বন্ধ করতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম)-এর লাইন ডিরেক্টর আব্দুল মান্নান, জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিনসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মো: লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.