শুকিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদী

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চার কোটি মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদী। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্বল নীতিমালার কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে নদীর পানি। যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ডে, প্রতিবছর ২ কোটি একর ফুট পানি প্রবাহিত হলেও বর্তমানে নদীর পানির প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ একর ফুটে। এতে সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠছে।
যে নদী একসময় পানিতে পরিপূর্ণ ছিল, তা আজ খাঁ-খাঁ করছে। খরার কারণে এমন দশা কলোরাডো নদীর। দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর মেক্সিকোর অন্যতম প্রধান নদী এটি। নয়নাভিরাম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ২ হাজার ৩৩৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুবিশাল এই নদী ক্যালির্ফোনিয়া, কলোরাডো, নিউ মেক্সিকো, নেভাদা ও অ্যারিজোনাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের অন্তত ৪ কোটি মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্বল নীতিমালার কারণে বিপজ্জনকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে কলোরাডো। ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে নদীটি। যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ডে এক শতাব্দী আগেও প্রতিবছর ২ কোটি একর ফুট পানি প্রবাহিত হতো নদীটিতে। কিন্তু বর্তমানে তা কমে ১ কোটি ৫০ লাখ একর ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুপেয় পানির ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন নদীর আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দারা।
কলোরাডোর লেক মেড এবং লেক পাওয়েল বাঁধ ৪ কোটিরও বেশি লোকের জন্য বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে থাকে। পানি কমে যাওয়ায় সেটিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। কলোরাডো নদীর ৮০ শতাংশ পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ‘পানির স্তর অনেক কমে গেছে। সবখানে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ভয়াবহ খারাপ অবস্থা এখানে।’ আরেকজন বলেন, ‘অনেক সময় মনে হয় এ সমস্যার সমাধান আমরা বের করতে পারব। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারব। কিন্তু সত্যি বলতে, ভবিষ্যৎ অন্ধকার। নদীর পানি আরও শুকিয়ে যেতে পারে।’
১৯০০ সাল থেকে কলোরাডোর পানির স্তর প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে। ২৩ বছর ধরে এ অঞ্চলে চলছে মহাখরা। একদিকে কম বৃষ্টিপাত, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। এর ফলে নদীর পানি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, দিন দিন এ পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। তবে শুধু কলোরাডোরই পানির পরিমাণ কমছে তা নয়, এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও কমছে। (সূত্র: রয়টার্স)। # 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.