শুকনো মৌসুমে চরে সবুজের সমারোহ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জেগে উঠা চরে সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। এতে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হয়েছে। এসব ফসল কৃষকদের বাড়তি আয়ের পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি সচল রেখেছে। প্রতি বছর এ অঞ্চলে বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে শত শত মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েন। এবার ফসল ভালো হওয়ায় কৃষকদের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস দেখা গেছে।
রংপুর কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে- রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা, ব্রক্ষপুত্র, ভটেশ্বরী, ধরলা, ঘাঘট, চারালকাটাসহ অন্যান্য নদ-নদীগুলোতে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমির চর রয়েছে। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমান ৫০ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি।
জেগে উঠা এসব চরের জমিতে আলু, ভুট্টা, গম, বাদাম, তিল, তিসি, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, করলা, সরিষা, সূর্যমুখী, গাজরসহ বিভিন্ন শাকসবজি অবাদ হচ্ছে। ফলে এখন চরের যেদিকেই তাকানো যাবে সে দিকেই দেখা যাবে সবুজের সমারোহ। চর এখন সবুজের বাগানে ভরে উঠেছে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এসব চরে আলু প্রতি হেক্টরে ২৪/২৫ মেট্রিন টন, ভুট্টা ১২/১৩ মেট্রিক টন, গম তিন থেকে সাড়ে ৩ টন, শাক-সবজি প্রতি হেক্টরে ১৫ থেকে ২০ টন উৎপাদন হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে এসব ফসল ফলায় কৃষকরা বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ার দুঃখ কিছুটা ভুলে যাচ্ছেন। নদী পানি শূন্য হয়ে পড়ায় সেগুলো এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়ে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার চর মটুকপুর গ্রামের আব্দুল হালিম ও মহিপুর এসকেএস বাজারের শরিফুল ইসলাম, কালাম মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বন্যার সময় তিস্তা দুইক‚ল ছাপিয়ে প্লাবিত করলেও শুকনো মৌসুমে ফসলের আবাদ করে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ আসে তাদের। চরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে বাড়তি টাকায় অনেকে অনেক প্রয়োজন মিটাচ্ছেন।
লক্ষীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, চরের অধিকাংশ মানুষ এখন বিভিন্ন প্রজাতির ফসল উৎপাদন করে দারিদ্র্যতা দূর করছেন।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারীর মহিষখোচা গ্রামের কৃষক আহম্মদ আলী ও লিয়াকত মিয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, চরে পিঁয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল ফলিয়ে তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে।
এব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, রংপুর অঞ্চলের চরে ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭৫ কোটি টাকার ওপরে। এতে কৃষকরা খুশি বলেও তিনি জানান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.