বিটিসি জীবন যাপন ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে মানুষের খাওয়াদাওয়াসহ জীবনযাপনে আসে নানা পরিবর্তন। এই সময়ে অনেকেই আইসক্রিম খেতে ভালোবাসেন। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা আইসক্রিমের স্বাদই আলাদা।
তবে এই মজার সঙ্গেই আসে কিছু অসুবিধাও।
অনেক সময় আইসক্রিম খাওয়ার পর সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা কিংবা হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, শীতকালে আইসক্রিম খাওয়া কি নিরাপদ?
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, শীতকালে আইসক্রিম খাওয়া একেবারে এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ এটি ঠাণ্ডা ছাড়াও উচ্চমাত্রার চিনি এবং ক্যালরি সমৃদ্ধ।
তবে যদি খুব খেতে ইচ্ছা হয়, তাহলে দুপুরে সামান্য পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
সুস্থ ও ফিট মানুষ মাঝে মাঝে শীতেও আইসক্রিম খেতে পারেন। কিন্তু যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বা যারা আগে থেকেই অসুস্থ, তাদের এই সময় আইসক্রিম খাওয়া উচিত নয়। এতে শারীরিক সমস্যা বাড়তে পারে।
পুষ্টিবিদরা আরো বলেন, শীতকালে অতিরিক্ত আইসক্রিম খেলে সর্দি-কাশি, গলার খুসখুসানি বা হজমে গোলমাল হতে পারে। তাই আইসক্রিম খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে বিশেষ নজর রাখা জরুরি। বাজারে পাওয়া
আইসক্রিমের পরিবর্তে ঘরে বানানো বা কম চিনিযুক্ত আইসক্রিম বেছে নেওয়াই ভালো। রাতের খাবারের পরপরই বা খালি পেটে আইসক্রিম খাওয়া উচিত নয়। আর ডায়াবেটিক রোগীদের সম্পূর্ণভাবে এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই সময় অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাবার, বিশেষ করে আইসক্রিম খাওয়া শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। যাদের সাইনাস বা গলার সমস্যা আছে, তাদের জন্য তো এটি আরো বিপজ্জনক। আইসক্রিম এই সমস্যাগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তবে আইসক্রিম খাওয়ার পর যদি সর্দি বা কাশি শুরু হয়, তাহলে গরম পানি পান করুন, আদা-চা খান এবং প্রয়োজনে ভাপ নিন। এ ছাড়া খাদ্যতালিকায় উষ্ণ প্রকৃতির খাবার ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, যেমন আমলকি, কমলা বা লেবু অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
তাই বলা যায়, শীতের দিনে আইসক্রিম খাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ নয়, তবে পরিমাণে এবং খাওয়ার সময়ে সংযম রাখা জরুরি। সুস্থ মানুষ মাঝে মাঝে দুপুরে সামান্য পরিমাণে আইসক্রিম খেতে পারেন। কিন্তু নিয়মিত বা অতিরিক্ত খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। ঠাণ্ডা, কাশি, সাইনাস বা ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে এটি একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখাই এই মৌসুমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আইসক্রিম খাওয়ার আনন্দ নিতে চাইলে—তা হোক সীমিত পরিমাণে, সঠিক সময়ে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে। তবেই শীতের মজা আর স্বাস্থ্যের ভারসাম্য দুটোই বজায় থাকবে। #

















