শিবগঞ্জে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীতে ইসিকে কাউন্সিলর জেম’র চিঠি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: শিবগঞ্জ পৌরসভার ০৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে পরিবার, সমর্থক, ভোটার ও গ্রামবাসীর নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দিয়েছেন বর্তমান ০৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী ও মো. খাইরুল আলম জেম। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর গতকাল সোমবার (২২ মার্চ) সকালে এই চিঠি দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) বরাবর পত্রের অনুলিপি দেয়া হয়েছে।
নির্বাজন কমিশনে দেয়া চিঠি সুত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় (১৪ ফেব্রæয়ারীর শিবগঞ্জ পৌর নির্বাচন) স্থগিত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার ০৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচন আগামী ৩১ মার্চ। নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী, তাদের পরিবার, সমর্থক, ভোটার ও গ্রামবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর পত্র দিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ০৯ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. খাইরুল আলম জেম।
এতে কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম, আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে শিবগঞ্জ পৌরসভার ০৯ নং ওয়ার্ডের দুটি ভোট কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন।
কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম উল্লেখ করেন, মর্দনা ও এর আশেপাশের গ্রামে হিন্দুদের ট্রাস্টের দেবত্তর সম্পত্তির ভোগদখল নিয়ে মামলা-হামলার জেরে ৫টি হত্যাকান্ড হয়েছে এলাকায়।
এছাড়াও গত ৭ মাসে ০৯ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকশ লোক নিজ গ্রাম ছেড়ে পাশের কয়েকটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। হামলা, মামলার আতঙ্ক থাকার পরও প্রতিদিনই ঘটে চলেছে হামলা, হুমকি, কৃষি ফসল ও ঘরবাড়ি লুটপাটের ঘটনা।
বিষয়গুলো তাৎক্ষণিক স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। শিবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচন ছাড়া মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচন বিচ্ছিন্ন ঘটনা, গুলিসহ ১৪ ফেব্রুয়ারী সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে পত্রে কাউন্সিলর জেম আরো বলেন, ৩১ মার্চ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, তত আনেসুর রহমান (সোনা মিয়া), আব্দুল, মাওলানা মতিন, মজু, টুটুল, গাজী, আলম কাপড়ার নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের চিহ্নিত গ্রুপ সাজানোসহ অসংখ্য সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে।
হয়রানী করতে আমার উপর গত ২১ ফেব্রুয়ারী/২১ একটি মিথ্যে মামলা করা হয়েছে। আমার পরিবারের সকল সদস্যরা নিরাপত্তা জনিত কারণে গ্রামে বসবাস করতে পারছে না। আমার ভোটের সমর্থকরা বিভিন্ন হুমকিতে গ্রামে স্বাভাবিক ভাবে মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না।
তিনি আবেদনে আরও উল্লেখ করেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশের এডিশনাল এসপি মাহবুব আলম এইসব চিহ্নিত গ্রুপকে পর্দার অন্তরালে থেকে বিভিন্ন প্রকার সাহস, সহযোগিতা, কুপরামর্শ দিয়ে আমাকে ও আমার সমর্থকদের নির্বাচনের বাইরে রেখে এক তরফা ও পেশিশক্তি নির্ভরশীল ৩১মার্চ নির্বাচন করতে চাচ্ছে, বলে অভিযোগ করেন বর্তমান কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম।
পত্রে তিনি আরো বলেন, আমি ও আমার সমর্থক ও পরিবারের সকল সদস্য উদ্বেগ ও শঙ্কা নিয়ে বসবাস করছি। আমার প্রাণ চলে যাবার শঙ্কা থাকলেও নির্বাচনী সকল বিধি মেনে প্রতিযোগিতা করবো, সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে।
নির্বাচনকালীন সময়ে আমার এবং সমর্থক ও পরিবারের কোন সদস্যর প্রাণহানিসহ কোন ঘটনার সম্মুখীন হলে তার জন্য দায়ী থাকবে এডিশনাল এসপিসহ উল্লেখিত চিহ্নিত গ্রুপটি। বিষয়গুলো আমলে নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও উৎসবমুখর করতে, সকল ভোটার ও প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
মুঠোফোনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান পিপিএম বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিক্তিহীন। অভিযোগের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেয়। এমনকি পত্রটিতে যাদের সাথে আমার যোগসাজশের অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের কাউকেই আমি চিনি না।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, পত্রের প্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন দুটি ভোট কেন্দ্রে দুইজন ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, গ্রাম পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.