শিবগঞ্জের বেলী ব্রীজে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে মানুষ ও যানবাহন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চরম ঝুঁকি নিয়ে শিবগঞ্জ-মনাকষা সড়কের পাগলা নদীর উপর বেলী ব্রীজ দিয়ে চলাচল করছে মানুষ ও যানববাহন। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। ঘটতে পারে প্রাণহানির মত ঘটনাও।
জানা গেছে,চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-মনাকষা সড়কের পাগলা নদীর ওপর বেলী ব্রীজের বেহাল দশা। ব্রীজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার ওপর দিয়েই চলছে সহস্রাধিক বিভিন্ন ভারী ধরনের যানবাহন।
শিবগঞ্জ সদর হতে মনাকষা পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। জনগণের দূর্ভোগের কথা চিন্তাকরে শিবগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যন ও সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম ডা. মইন উদ্দিন আহম্মেদ মন্টু (ডাক্তার)’র উদ্যোগে সম্ভাব্য ১৯৮৬সালে ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু হয়েছিল এবং ১৯৮৮ সালে উদ্বোধন হয়েছিল। ব্রীজটি দীর্ঘ ১৫০ মিটার ও প্রস্থ ১২ফিট। এখন অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ফলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আর এই ভাঙ্গাচুরাব্রিজ দিয়েই চলাচল করছে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধীক মানুষ। শিবগঞ্জ-দূলর্ভপুর-মনাকষা সড়কে চলাচলকারী ভ্যান,সিএনজি, ইজিবাইক, পিকআপ-ট্রাক পণ্য ও যাত্রীসহ মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে। এতে করে মানুষ গুলোর পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি এবং যানবাহন গুলোর নানার কমের যান্ত্রিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, ব্রীজটির স্টীলের পাটাটন গুলো নিদিষ্ট স্থান হতে সরে গেছে। নাট-স্ক্রু সব ঢিলে হয়ে গেছে।কয়েকটি পাটাটন বসে গেছে। তার মধ্যে একটি পাটাটন প্রায় ৮/৯ইঞ্চি নীচে বসে গেছে। এই ব্রীজে চলাচলকারী অটো চালক জামাল উদ্দিন, হাকিম, দোয়েল, তোজাম্মেল হক,অটোরিক্সা চালক মনিরুল ইসলাম, স্ট্রিয়ারিং চালক স্বপনআলি, আমের সাইকেল ওয়ালা আজিজুল হক সহ প্রায় ৪০/৫০জন বিভিন্ন যানবাহনের চালকের সাথে আলাপ করে জানায়, বিকল্প কোন পথ থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজের ওপর দিয়েই চলাচল করছি। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা।
তারা আরো বলেন, কানসাট হয়ে ঘুরে যাতায়াত করা যায়। তবে বর্তমানে আমের মৌসুম হওয়ায় অতিরিক্ত যানজট ও ভাড়া বেশী হওয়ায় যাত্রীর সেখান দিয়ে যেতে চাইনা।
সাধারণ যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এ ব্রীজটির ওপর দিয়ে মনাকষা, বিনোদপুর, শ্যামপুর,দূর্লভপুর সহ আরো কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩লাখমানুষ যাতায়াত করেন। উপজেলা একমাত্র সরকারী আদিনা ফজলুল হক কলেজ সহ ৭/৮টি কলেজ ও ২০ টি উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এ পথে যাতায়াত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চাকুরীজীবি বলেন,সারাদিন অফিস করে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরারা সময় এ ব্রীজে কয়েকদিন দূর্ঘটনারা শিকার হয়েছি। অল্পের জন্য রক্ষাপেয়েছি।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু আহমেদ নাজমুল কবীর মুক্তা, দূর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজিব রাজু, মনাকষা ইউপি চেয়ারম্যন সহ আওয়াসীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবী জানান।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমরা ব্রীজটি ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছি। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ব্রীজের দু’দিকে সাইন বোর্ড টাঙানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোন কথা কর্ণপাত করছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ভারীযানবাহন চলাচল বন্ধ করার জন্য। কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুর ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইতিমধ্যে সংসদ সদস্যের সাথে আলাপ করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনদূর্ভোগ দূর করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ব্রীজটি ব্যাপারে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন শুধু একনেকের অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইতিমধ্যে মাটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.