শিক্ষা অফিসারের দুর্নীতি বড়াইগ্রামে নাম সংশোধনী বাবদ চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

 

নাটোর প্রতিনিধি : বড়াইগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের এমপিও তালিকায় নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনের অফিস খরচের নামে প্রায় চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তার নামে ঘুষ-দুর্নীতি, শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অফিস চলাকালীন কাজকর্ম ও ঘরের দরজা বন্ধ রেখে বিশ্রাম নেয়া, অফিসে প্রকাশ্যে ধুমপানসহ নানা কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলাতেও বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (মান্থলী পেমেন্ট অর্ডার) তালিকায় নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে সরকারী ভাবে কোন ধরণের ফি নির্ধারণ করা না হলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফ তার অফিস সহকারী আব্দুল কুদ্দুসের মাধ্যমে এ কাজে আসা প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষকের প্রত্যেকের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে দুই হাজার টাকা করে আদায় করছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান গত বুধবার এ টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে খবর পেয়ে আরো শিক্ষকেরা এসে প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সাথে থাকা রামেশ^রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরৎ দিলেও পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে আগের মতই টাকা আদায় করেছেন বলে জানা গেছে। এভাবে তিনি নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধন করতে আসা দুই শতাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

অপরদিকে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন, বিএডসহ বিভিন্ন স্কেল পরিবর্তন, শিক্ষক এমপিওসহ বিভিন্ন কাজে উৎকোচ ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না। বিএডসহ যেকোন স্কেল পরিবর্তনে ১০-১৫ হাজার টাকা, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওতে শ্রেণী ভেদে ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাকা না দিলে কাগজপত্রে অযথাই ভুল ধরাসহ নানা ভাবে হয়রানী করেন বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক ওয়াসেক আলী সোনার বলেন, শিক্ষক সমিতির মিটিংয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে এ উপজেলা থেকে বদলীর দাবী উঠেছে। সে অনুযায়ী তার দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতেও কাজ না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও এমপিও তালিকায় সংশোধনীতে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেয়া এবং দুজন শিক্ষকের টাকা ফেরৎ দেয়ার প্রসঙ্গে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.