শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জন জরুরি : শিক্ষা উপমন্ত্রী

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জন জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও জীবন-জীবিকার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (২১ জুন) চলতি বছরের দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা জানান।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষাসপ্তাহ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। আর অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘গতানুগতিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে গিয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষা, দক্ষতানির্ভর শিক্ষার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। সেই লক্ষ্যে ড. কুদরত-ই-খোদা কমিশন গঠন করেছিলেন। শিক্ষা কমিশনের যে বিষয়ে প্রধান্য দেওয়া হয়েছিল, সেটা হচ্ছে গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে গিয়ে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করা।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ বাড়ালেই হবে না। শুধু অবকাঠামোর ওপর আর খুব বেশি গুরুত্ব দেবো না। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, অবকাঠামো হচ্ছে, কিন্তু সেগুলো কারা পরিচালনা করবেন? সবচেয়ে বেশি সেখানে প্রয়োজন মানবসম্পদ। মানবসম্পদ যদি ঠিক থাকে, তাহলে বটবৃক্ষের নিচে বসেও পাঠদান করা যায়। মানবসম্পদ যদি সঠিক না থাকে, তাহলে এয়ারকন্ডিশনে বসেও পাঠদান করাতে পারবো না। এমন কোনও উন্নয়ন শিক্ষা খাতে করতে চাই না, যেখানে শুধু যন্ত্র কেনা হবে, বিশ্ববিদ্যালয়  প্রতিষ্ঠা হবে, উপজেলায় উপজেলায় সুন্দর সুন্দর অবকাঠামো তৈরি হবে— কিন্তু আমার সন্তানের যে প্রশিক্ষণ পাওয়া দরকার, তা পাওয়া যাবে না। যে দক্ষতা অর্জনের দরকার, সেই লোকগুলো আমরা পাচ্ছি না। বৃত্তির সঙ্গে সম্পর্কিত লোকদের আমরা আনতে পারছি না। কর্মউপযোগী আমরা করতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের কর্ম উপযোগী করার জন্য প্রায়োগিক শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রায়োগিক শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের আহ্বান জানাবো সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিদ্যালয়ে জীবন ও জীবিকার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক স্থান করতে হবে। শিক্ষার্থী মনে না করে যে, মুরগি উৎপাদন হয় ফ্রিজের মধ্যে। কোথায় মুরগির ফার্ম আছে কীভাবে উৎপাদন হচ্ছে, খাদ্য কীভাবে উৎপাদন হচ্ছে— তা দেখাতে হবে শেখাতে হবে। আমরা যেনও মনে না করি, বিস্কুটের টিনের ভেতর ময়দা উৎপাদন হয়। শহর অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা কৃষি উৎপদন প্রক্রিয়া থেকে একবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সেগুলো দেখাতে হবে। শিক্ষার্থীদের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। পড়ালেখা করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে, গাড়ি ঘোড়ায় চড়াই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে উপমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থা শুধু ডাক্তার দিয়ে হবে না। শুধু লাখ লাখ চিকিৎসক তৈরি করে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে না। নার্স, হেলথকেয়ার ওয়ার্কারসহ অনেক ওয়ার্কার প্রয়োজন। তাই লেখাপড়া করে শুধু ডাক্তার আর ইঞ্জনিয়ার হবে, এমনটা যেন না শেখাই।’ 
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.