শিক্ষক ও শ্রেণীকক্ষ সংকটে রাবি ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ


রাবি প্রতিনিধি:  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ (পিইএসসি) বিভাগ চালু হয়েছে ২০১৫ সালে। প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছরেও বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই ধার করা শিক্ষক নিয়েই বছরের পর বছর চলছে শ্রেণী কার্যক্রম। শিক্ষক ছাড়াও এখানে কোনো গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব নেই। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তবে শিক্ষকসংকট ও অপ্রতুল শ্রেণীকক্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বিভাগ সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে এতদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটা আটকে আছে। এ কারণে অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়েই শ্রেণী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ খুব শীঘ্রই সম্ভাব্য শিক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে।

শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ভবনের বর্ধিতকরণ এর কাজ চলছে এগুলোর কাজ শেষ হলেই আশা করছি পিইএসসি বিভাগের শ্রেণীকক্ষ সংকট আর থাকবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেটের এক সদস্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, ‘ধার করা শিক্ষক নিয়ে বিভাগ চলতে পারে না। উদ্যোগ নিয়েও এখন পর্যন্ত শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া চার বছরের মাথায় শিক্ষার্থীদের অপ্রতুল শ্রেণীকক্ষ, খন্ডকালীন শিক্ষক, একাডেমিক সরঞ্জামাদির সংকটের মধ্যে বিভাগ চলতে থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই সংকট কাটিয়ে উঠতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নিয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে খোলা হয় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামের দুইটি কক্ষ শ্রেণীকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে যাত্রা শুরু করে বিভাগটি। বিভাগের চারটি ব্যাচের বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ১২০জন।

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো রায়হানুল হক অভিযোগ করে বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষক না থাকায় সঠিক নির্দেশনাও অনেক সময় পান না তাঁরা। আবার স্থায়ীভাবে নিয়োগ না হওয়ায় খন্ডকালীন শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। খেলার মাঠের পাশে শ্রেণী কক্ষের কারণে সবসময় একটি কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ থাকে। এতে করে আমাদের পড়ালেখায় মনোযোগে বিঘœ ঘটে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বেশিকিছু চাইনা। আমাদের নিজস্ব ক্লাসরুম দিক প্রশাসন, এতবড় চারটে বিজ্ঞান ভবনে ছোট একটি বিভাগ কে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

এসব বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, বিভাগ খোলার আগে একটি পরিকল্পনা থাকা উচিত। শিক্ষক, অবকাঠামো, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে বিভাগ খোলা দরকার। তিনি বলেন, পরিকল্পনা না করে বিভাগ খুললে শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাই অবশ্যই এসব বিভাগে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ ও শ্রেণীকক্ষ সংকট দূর করতে হবে।

বিভাগের সভাপতি প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাস সার্বিক বিষয়ে বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় শুরুর দিকে তেমন সমস্যা হয় নি। তবে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের। শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় কোর্স শেষ করতে শিক্ষকদেরও বেগ পেতে হয়েছে। আমি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৈৗখিক ভাবে অনেকবার অবগত করেছি। আশা করছি এসব সংকট খ্বু শিগগিরি কেটে যাবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.