শিক্ষকদের হামলায় গোদাগাড়ী কলেজ অধ্যক্ষ গুরুতর জখম

গোদাগাড়ী প্রতিনিধি: কয়েকজন শিক্ষকের হামলায় আহত হয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উমরুল হক। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকালে অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে কয়েকজন শিক্ষক তাকে মারপিট করেন। 
আহত উমরুল হককে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। কী নিয়ে এ হামলার ঘটনা তা পরিষ্কার নয়। তবে এবার যেসব শিক্ষক অধ্যক্ষ উমরুল হককে পিটিয়েছেন, তারাই ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট তৎকালীন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের ওপর হামলা করে গুরুতর জখম করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সাবেক অধ্যক্ষকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে।
হামলাকারী হান্নান হোসাইন ও মামুনসহ অন্যরা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গোদাগাড়ী কলেজের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন,গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকালে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক হান্নান হোসাইনের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা অধ্যক্ষকে চড় থাপ্পড়, কিলঘুষি মারতে থাকেন। অধ্যক্ষ আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও পরে হামলাকারীরা তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে বেপরোয়া লাথি মারতে মারতে রক্তাক্ত করেন।
হামলাকারীরা তাকে কক্ষের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেন। এ সময় অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী দরজা ভেঙে অধ্যক্ষ উমরুল হককে উদ্ধার করেন। দ্রুত সময়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।
আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। অধ্যক্ষ উমরুল হক বিটিসি নিউজকে বলেন, তিনি বুকে ও মুখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।
এদিকে গোদাগাড়ী থানার (ওসি) কামরুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, অধ্যক্ষের ওপর হামলার কথা শুনেছি। কিন্তু আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) পর্যন্ত কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন সাবেক এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ও কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে শিক্ষকদের জামায়াত সমর্থক অংশটি তৎকালীন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান থানায় মামলা করলে পুলিশ বর্তমান অধ্যক্ষ উমরুল হক ও তার ওপর হামলায় নেতৃত্বদানকারী হান্নান হোসাইনসহ ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ১০ অক্টোবর আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ১১ অক্টোবর তারা জামিন লাভ করেন। এর পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে শিক্ষক হান্নান হোসাইনের নেতৃত্বে বর্তমান অধ্যক্ষের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।
গোদাগাড়ী কলেজে বারবার অধ্যক্ষের ওপর হামলার ঘটনা কেন ঘটছে, জানতে চাইলে এলাকাবাসী জানান, কলেজটিতে গত কয়েক বছরে যেসব শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা সরাসরি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত। কলেজটি কয়েক বছর আগে জাতীয়করণের প্রাক্কালে এসব শিক্ষক আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এসব শিক্ষকের অনেকেই এখনও ভেতরে ভেতরে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। কলেজটির কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে নিতে বারবার তারা কলেজ অধ্যক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গোদাগাড়ী প্রতিনিধি মো. আলতাফ হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.