শিকলে বন্দি আসাদুজ্জামানের জীবন, অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন পরিবার!

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের মধ্য গড্ডিমারী গ্রামের খানের বাজার এলাকার মৃত জাফরের ছেলে আসাদুজ্জামান (৪৯)। পেশায় দিনমজুর ছিলেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় শিকলে বন্দি করে রাখেন পরিবারের লোকজন। বৃদ্ধা মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে খাবার জোগান। ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। চিকিৎসা করানো গেলে আবারও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারেন আসাদুজ্জামান।
স্থানীয়রা জানান, সংসারে ৬ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সুখে দুঃখে চলছিল তাদের সংসার জীবন। ইতিমধ্যে ৫ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু গত বছর আসাদুজ্জামান মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তার অস্বাভাবিক আচরণে পরিবার ও স্থানীয়রা অতিষ্ট। তার স্ত্রী এক মেয়ে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি পঞ্চগড়ে চলে যান। উপায়ন্ত না পেয়ে তার বৃদ্ধা মা স্থানীয়দের সহযোগিতায় পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন আসাদুজ্জামানকে। তখন থেকে তার জীবন কাটে বাড়ির পাশে গাছের তলায়। শীতে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থাকলেও অর্থাভাবে হয়নি তার চিকিৎসা।
আসাদুজ্জামানের ফুফাতো ভাই শ্যামল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ২০ বছর ধরে তার চলাফেরায় অস্বাভাবিক মনে হলেও গত ৬ মাস ধরে তার পাগলামো বেড়ে যায়। উপায়ন্ত না পেয়ে পরিবারের লোকজন শিকলে বেঁধে রাখেন। অর্থাভাবে তার চিকিৎসা কারানো সম্ভব হয়নি ।
আসাদুজ্জামানের মা আশফা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাহে সহায় সম্পদ বলতে হামার আছে বসতবাড়ি। বয়স্ক ভাতা ও অন্যের বাড়িতে কাজ করে চললেও চিকিৎসা করানোর কোনো সামর্থ্য নেই। কোনমতে দুই বেলার খাবার যোগানোই কষ্টসাধ্য হয়েছে। এরপর ছেলের চিকিৎসা করাবো কিভাবে? তিনি তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে যদি কোনো সুযোগ থাকে তাহলে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হরে।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজির হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। শিকলে বন্দি জীবন থেকে তাকে পাগলাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.