শাহজাদপুরে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়, দেখার কেউ নেই

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় ১৮টি ইট ভাটায় দুই ও তিন ফসলি কৃষি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে । দেখার কেউ নেই । জেলা প্রশাসন বলছেন পরিবেশ অধিদপ্তর বিষয়টি দেখবে । আর পরিবেশ অধিদপ্তর বলা হচ্ছে জেলা প্রশাসন ইট ভাটার অনুমতি দিয়ে থাকেন। তাই এখন শাহজাদপুরে ইট ভাটার মাটি কাটা নিয়ে এক ধরনের নৈরাজ্য বিরাজ করছে ।

জানা গেছে শাহজাদপুর উপজেলা সহ পাশের উপজেলা গুলোতে ইটের চাহিদা বহুগুন বেড়ে গেছে । ইটভাটায় মাটির জোগন দিতে ভাটার মালিকদের সাথে যুক্ত হয়েছেন একটি চক্র । এ চক্রটি টাকার লোভ দেখিয়ে কৃষি জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি কিনে তা ইট ভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে । কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনে দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমি থেকে ইট ভাটায় মাটি সরবরাহ করায় শাহজাদপুরে বিরান হচ্ছে কৃষি জমি । এ চক্রটি নদীর মাটিও ইট ভাটায় সরবরাহ করছে ।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে ,উপজেলার গাড়াদহ ও কায়েমপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৮টি ইট ভাটা রয়েছে । এর মধ্যে গাড়াদহ ইউনিয়নেই রয়েছে ১২টি । সূত্র জানায়, গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর ব্লকে ৭টি ইটভাটা রয়েছে , গাড়াদহ ব্লকে রয়েছে ২টি ও টেপরি ব্লকে রয়েছে ৩টি ইট ভাটা । এছাড়া কায়েমপুর ইউনিয়নের শিমুলতলি ব্লকে রয়েছে ২টি ও কায়েমপুর ব্লকে রয়েছে ৪টি ইটভাটা ।

খবর নিয়ে জানা গেছে ইটভাটার মালিকদের কেউ কেউ আবার জন প্রতিনিধি । এরা এতটাই প্রভাবশালী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এখন এক ফসলি নয় ২ ও ৩ ফসলী জমি থেকে ইট ভাটার মাটি কিনছে। নিয়ম রয়েছে কৃষি জমি , আবাসিক এলাকা , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , এলজিআরডির সড়ক সমূহের পাশে ইট ভাটা স্থাপন করা যাবে না । তবু এগুলো মানা হচ্ছে না ।

এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইটভাটা তৈরীর পূর্বে স্থানীয় কৃষি অফিস ও ভ’মি অফিস থেকে অনুমতি নিতে হয় । তা পরিবেশ অধিদপ্তরে জমা দিলে পরিবেশ অধিদপ্তর যাচাই বাচাই শেষে জেলা প্রশাসনের কাছে মতামত পাঠানোর পর জেলা প্রশাসন তা যাচাই বাছাইর পর জেলা প্রশাসন উপযুক্ত স্থানে ইটভাটা তৈরীর অনুমতি দিয়ে থাকেন ।

এব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোন ইটভাটা চলতে পারে না । পরিবেশ ছাড়পত্র পেলেই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়া হয় ।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় (বগুড়া) উপ-পরিচালক আকতারুজ্জামান টুকুর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইট ভাটার লাইসেন্স স্বস্ব এলাকার জেলা প্রশাসক মহাদয় দিয়ে থাকেন । পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ কেউ পরিবেশ বিনষ্ট করছে কিনা সেটি দেখার ।

এদিকে শাহজাদপুরে ১৮টি ইটভাটা মধ্যে প্রায় সব গুলো ইট ভাটা আবাসিক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খুব কাছাকাছি হওয়ায় ও মাটি বোঝাই ট্রাক গুলোর কালো ধোঁয়া , এর সাথে বাতাশে ধূলিকণা মিশে পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দুষন করছে । নির্বিচারে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় জমি গুলো গভীর গর্তে পরিনত হয়েছে । প্রতিদিন শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর , গাড়াদহ , পোতাজিয়া ইউনিয়ন সহ প্রায় সব ইউনিয়নের উর্বর জমি থেকে ব্যাপক ভাবে মাটি কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুস সালাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে সাফ জানিয়েদেন তার হাতে কোন ক্ষমতা নেই কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধ করা । তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিষয়টি নিয়ে তৎপর না হলে খুর শিগগির এ উপজেলার শতশত বিঘা কৃষি জমি হারিয়ে যাবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি মো: সুলতান হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.