শার্শায় ইজিবাইক চালক সাকিব হত্যার রহস্য উদঘাটন, আটক-৩

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের শার্শায় ইজিবাইক চালক সোলায়মান সাকিব (১৪) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুইজনসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন:  ঝিকরগাছার চান্দেরপোল গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন মোল্লার ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩০), বাঘারপাড়ার বারভাগ গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিন মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান মিলন (২২) এবং চৌগাছার মাড়ুয়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম প্লাবন (৩০)। সাকিবের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি আটক প্লাবনের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পিবিআই।
পিবিআই জানিয়েছে, বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর সাকিব নানার বাড়ি শার্শা উপজেলার গোগা গ্রামের কারিগর পাড়ায় থাকতো। গত ১৭ জানুয়ারি দুপুর ১টার দিকে সাকিব তার নানার ইজিবাইক নিয়ে বাগআচঁড়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর সে বাড়িতে ফেরেনি। পরদিন ১৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার উলশী ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের কুল বাগানে সাকিবের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় সাকিবের নানা আকবর আলী শার্শা থানায় একটি মামলা করেন।
পিবিআই মামলার তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) ওই তিনজনকে আটক করে। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম প্লাবনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক চৌগাছা উপজেলার ছুটিপুর রোডের নুরুজ্জামান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের মধ্যে থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই জানিয়েছে, আটক তিনজনই ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান, ইজিবাইক, রিকশা ছিনতাই ও চুরি করে তা বিক্রি করে দেয়। আটক মনিরুল ইসলাম বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। ওই মামলা পরিচালনা করতে টাকার প্রয়োজন বলে মনিরুল তার সহযোগী মেহেদী হাসান মিলন ও জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে বার্মিজের সঙ্গে পরামর্শ করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত করে।
এরপর পরিকল্পনা মতে, গত ১৭ জানুয়ারি মিলন ও জাহাঙ্গীর হোসেন বার্মিজ বাগআচঁড়া বাজার থেকে সাকিবের ইজিবাইকটি এক হাজার টাকায় ভাড়া করে। তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরবে বলে জানায়। তারা বিকেলে এক ফাঁকে ঝিকরগাছার গদখালীতে আসে। সেখান মেয়েদের সঙ্গে দেখা করবে বলে চালক সাকিবকে জানায়। গদখালীতে কাউকে না পেয়ে সাকিব ভাড়া মিটিয়ে ছেড়ে দিতে বলে। পরে তারা ফের শার্শার দিকে ফিরে যায়। এক ফাঁকে মিলন চালক সাকিবের মোবাইল ফোনসেট ব্যবহার করে মনিরুলকে ফোন দেয়। মনিরুল তাদের উলশী এলাকার বড়বাড়িয়া গ্রামে যেতে বলে। সেখানে আব্দুল রশিদের কুল বাগানে তারা দাঁড়ায়। সাকিবকে তারা কুল খেতে বলে। সাকিব একটি গাছ থেকে কুল পাড়ার সময় মনিরুল একটি গামছা দিয়ে তার গলায় ফাঁস লাগাতে যায়। সেসময় সাকিব বুঝতে পেরে দৌড় দেয়। সাকিবের পিছু ধাওয়া করে পেছন থেকে একটি রেঞ্জ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে মনিরুল। সঙ্গে সঙ্গে সাকিব মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মনির কানের ভেতর ঠুকিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে এবং ইজিবাইক নিয়ে চৌগাছায় চলে যায়। সেখানে প্লাবনের কাছে ইজিবাইকটি ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মেহেদী হাসান মিলন। ম্যাজিস্ট্রেট ওই জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর যশোর প্রতিনিধি শফিক ইসলাম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.