শহরের বিক্ষোভ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্সের গ্রামে-গঞ্জে

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গতকাল শনিবার রাতভর ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে কারফিউর মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। অন্য দিকে এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা এবার ছড়িয়ে পড়ছে গ্রাম-গঞ্জে। যা দমনে দফায় দফায় বৈঠক করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কমকর্তারা। তারা সরকারে সঙ্গে বসছেন বার বার।
জানা যায়, ফ্রান্সে টানা পঞ্চম রাতের মতো পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠ নানতেরেতে পুলিশের গুলিতে নাহেদ এল (১৭) নামের এক কিশোর নিহত হন। এরপরই বিক্ষোভে নামেন দেশটির তরুণ-তরুণীরা। যা দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
গত চার দিনের মতো— শনিবার রাত থেকে আবারও রাস্তায় জড়ো হওয়া শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর রোববার (২ জুলাই) রাতভর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেন তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
শনিবার রাতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে দক্ষিণের শহর মার্সেইতে। বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ সেখানে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। এছাড়া মার্সেই থেকে ৫৬ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
তবে রাজধানী প্যারিসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের কারণে পঞ্চম রাতে সেখানে বিক্ষোভকারীরা এতটা সংগঠিত হতে পারেননি। যার ফলে প্যারিস গত কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা শান্ত ছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাড ডারমানিন টুইটে জানিয়েছেন, গত রাতে সবমিলিয়ে ৪২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তাবাহিনীর প্রশংসা করেন তিনি। তার দাবি, তাদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে অন্যদিনের তুলনায় শান্ত একটি রাত পার করেছেন ফ্রান্স।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্সেইতে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের বড় একটি অংশ শহরের সবচেয়ে বড় এভিনিউ লা ক্যানবেরেতে জড়ো হন। ওই সংঘর্ষ কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে থাকে।
অপরদিকে প্যারিসের বিক্ষোভকারীদের আইকনিক চ্যাম্পস-এলিতে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকায় তারা সেখানে আর জড়ো হতে পারেননি। তবে তা সত্ত্বেও প্যারিসে ১২৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে হয় পুলিশকে। সাবধানতা অবলম্বনের জন্য স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে রাজধানীতে সব ধরনের বাস ও ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উত্তর দিকের শহর লিল-এ পুলিশ সদস্যদের রাস্তায় অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ শহরে কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ফায়ার ফাইটাররা দ্রুত এসে সেসব আগুন নেভান। শহরটির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, গত রাতে এখানে অন্তত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার নানতেরেতে একটি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল নাহেল এম। ওই সময় তাকে থামার নির্দেশনা দেয় পুলিশ। গাড়ি থামার পর নাহেলের দিকে এক পুলিশ সদস্যকে পিস্তল তাক করে রাখতে দেখা যায়। তবে নাহেল হঠাৎ করে গাড়ি টান দিলে পুলিশ সদস্য খুব কাছ থেকে গুলি করে তাকে হত্যা করেন।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, নাহেল তামাটে রঙের মানুষ হওয়ায়— বর্ণবাদমূলক আচরণ থেকেই ওই পুলিশ সদস্য তাকে সরাসরি গুলি করেছেন। (সূত্র: বিবিসি)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.