শতবর্ষের পথে নবদ্বীপের বালক সাধু প্রতিষ্টিত প্রাচীন মায়াপুর জগন্নাথ বাড়ির প্রাচীনতম রথ

নদীয়া (ভারত) প্রতিনিধি: দেশ জুড়ে পালিত হতে হচ্ছে রথ যাত্রা উৎসব। যাকে ঘিরে বিশেষ করে পুরী ধাম, শ্রীরামপুরের মাহেশ, হুগলির গুপ্তি পাড়া সহ নদীয়ার নবদ্বীপ শহর, মায়াপুর জুড়ে সাজো সাজো রব।
যদিও ব্যতিক্রমি নদীয়ার সদ্য সরকার দ্বারা হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া মন্দির নগরী নবদ্বীপ ধাম। দেশের অন্যতম প্রাচীন ও পুরাতন শহর এই নবদ্বীপ ধাম।
চৈতন্য ভূমি নবদ্বীপ ধামে বছর ভর কোন না কোন উৎসব অনুষ্ঠান লেগেই থাকে বিভিন্ন মঠ মন্দিরে, এছাড়াও যুগ পুরুষ ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান হওয়ায় সারা ভারত বর্ষ তথা বিশ্বের থেকে সারা বছর ভর ভক্ত সমাগম লেগেই থাকে।
রথ উৎসবও নবদ্বীপ  তথা নবদ্বীপ শহরের পার্শ্ববর্তি মায়াপুর ইস্কনেও খুব ধুম ধাম করেই পালিত হয় প্রতিবছর। যদিও গত দুবছর করোনার কারনে তা সেভাবে হয়নি।
বর্তমানে রথ যাত্রা উপলক্ষ্যে নবদ্বীপ শহরের বুকে বেশ কয়েকটি রথ বেরায়। তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল নবদ্বীপ প্রাচীন মায়াপুরের সিদ্ধ পুরুষ বালক সাধু প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ বাড়ির রথ, যা শতবর্ষের পথে।
নবদ্বীপের পুরাতন ও প্রথম রথ হল প্রাচীন মায়াপুরের সিদ্ধ পুরুষ বালক সাধু প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ বাড়ির রথ,। যাকে ঘিরে আজও গোটা শহরের ও পার্শ্ববর্তি এলাকার বহু মানুষের ঢল নামে। সঠিক কত বছর পুরাতন এই রথের বয়স সঠিক না জানা গেলেও মন্দিরের বর্তমান সেবাইত লোকনাথ বাবু জানান তার জ্ঞান হওয়া থেকেই দেখে আসছেন এই রথ যাত্রা, বর্মানে তার বয়স আশির দোরগোড়ায়।
তিনি জানান তার বাবার গুরুদেব হবার সুত্রে তার ৮ বছর বয়স কাল থেকে তিনি মন্দিরের প্রতিষ্টাতার কাছে যাতায়াত করতেন, তার কাছ থেকেই শোনা কথা বলে তিনি বলেন মন্দিরে পূজিত বর্তমান শ্রী বিগ্রহ প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ময়মনসিংহ জেলার সিরাজ গঞ্জে বর্তমানে যা বাংলাদেশে অবস্থিত।
রথের তথা মন্দিরের অন্যতম সদস্য ব্রজগোপাল সাহা বলেন, আমি ৯০ বছর বয়সী এক প্রবীন ব্যক্তির কাছে শুনেছি সেও তার ছোট বেলা থেকেই এই রথ যাত্রা দেখে আসছে।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সিদ্ধ পুরুষ বালক সাধুর আসল নাম মহাত্মা শ্রীল যাদব চন্দ্র রায়,জন্ম হয়েছিল বাংলার ১২৯৮ সালে। মাত্র ৮ বছর বয়সেই তিনি সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। তাই তার নাম হয়েছিল বালক সাধু।
পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ থেকে তিনি নবদ্বীপে আসেন ও ধীরে ধীরে এই মন্দির গড়ে তোলে। ও এই রথের সূচনা।
এই রথের সূচনার ইতিহাসে জানা যায় প্রথম যে রথে রথ যাত্রা শুরু হয়েছিল তা এক জমিদার বাড়ি থেকে বালক সাধুকে দিয়েছিল,।
এই রথ টি প্রাচীন মায়াপুর জগন্নাথ বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্পীড়তলা রামকৃষ্ণ মঠ পর্যন্ত যায় ও পুনরায় ফিরে আসে।
রথের দিন বেরিয়ে উল্টোরথ পর্যন্ত প্রভু জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রা মাতা থাকে প্রাচীন মায়াপুর নিমাই জন্মস্থান আশ্রম মন্দিরে। উল্টোরথ পর্যন্ত বিভিন্ন ধার্মিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এ কদিন।
এবং পুণরায় উল্টোরথের দিন বেরিয়ে আবার জগন্নাথ বাড়িতে যায়। গত দুবছর করোনার কারনে সেভাবে রথ উৎসব পালন করা হয়নি, তবে এবছর ভক্ত সমাগম বেশ ভাল হবে বলেও আসাবাদি মন্দির কতৃপক্ষ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর নদীয়া (ভারত) প্রতিনিধি গোপাল বিশ্বাস। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.