বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণের কারণে লোহিত সাগর ব্যবহার করছে না জাহাজ সংস্থাগুলি। বিদ্রোহীরা হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন দেখিয়ে আক্রমণ করে যাচ্ছে জাহাজগুলোতে। যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ ডিসেম্বর ইরানের হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের কাছে লোহিত সাগরে কয়েকটি মার্কিন জাহাজের উপর আক্রমণ চালায়। জাহাজগুলি পণ্যবাহী ছিল। এরপরেই অধিকাংশ বাণিজ্যিক জাহাজ সংস্থা ঠিক করে, তারা লোহিত সাগরের রাস্তা এড়িয়ে অন্য পথ নেবে।
এশিয়া থেকে ইউরোপের পথে লোহিত সাগর হলো সবচেয়ে সহজ রাস্তা। লোহিত সাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে সুয়েজ খাল ধরে যায় এই রাস্তা। এই রাস্তা এড়াতে হলে আফ্রিকায় ঢুকতে হবে। বস্তুত, আফ্রিকার সেই ঘুরপথেই আপাতত চলাচল করছে অধিকাংশ পণ্যবাহী জাহাজ। কেপ অফ উড হোপ হয়ে তারা এশিয়ার রাস্তা ধরছে।
এর ফলে জাহাজগুলির চলাচলের সময় অন্তত এক সপ্তাহ বেড়ে গেছে। যেতে হচ্ছে অতিরিক্ত তিন হাজার ৫০০ নটিকাল মাইল। এর ফলে জাহাজ চলাচলের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। বস্তুত, সুয়েজ খাল দিয়ে বিশ্বের ১২ শতাংশ বাণিজ্য সঞ্চালিত হয়। সেই ব্যস্ত রাস্তা এখন কার্যত খালি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসের দাম ভয়ংকর ভাবে বেড়ে যাবে। সাংহাই থেকে রোটারডাম যদি কেপ অফ গুড হোপ হয়ে যেতে হয়, তাহলে জাহাজের তেলের দামই এক মিলিয়ন ডলার বেশি পড়ে। পণ্য সংস্থাগুলি স্বাভাবিকভাবেই সেই ক্ষতি নিজেদের কাঁধে রাখবে না। তারা পণ্যের উপর সেই দাম ধার্য করবে। ফলে জিনিসের দাম ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে।
শুধু তাই নয়, এই পথে যাত্রা করা জাহাজগুলির বিমার মূল্যও অনেকগুণ বেড়ে গেছে। কোপেনহাগেনের একটি সংস্থার বাজার বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, ‘জাহাজের এই অন্য রাস্তা নেয়া আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।’
সমস্যা হচ্ছে অন্য দিকেও। ইউরোপের বন্দরগুলিতে নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ লোক আছে। ধরা যাক একটি বন্দর সপ্তাহে ৫০ হাজার কনটেনার নামাতে অভ্যস্ত। সেখানে আচমকাই দেখা গেল এক সপ্তাহে কনটেনার আসছে না, পরের সপ্তাহে দ্বিগুণ কনটেনার আসছে। তখন কাজের ভারসাম্য নষ্ট যায়। জাহাজগুলি সুয়েজ খাল এড়িয়ে চলার ফলে বর্তমানে ঠিক সেই ঘটনাই ঘটছে। বন্দরগুলিতে ভয়াবহ চাপ বেড়ে গেছে। যা সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
কোভিডের সময় একবার কিছুদিনের জন্য সুয়েজ খাল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সে সময় গোটা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য আচমকাই অনেকটা বেড়ে গেছিল। ফের তেমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
যদিও গত সোমবারই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, লোহিত সাগরের জন্য একটি নতুন প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। পণ্যবাহী জাহাজগুলিকে হুতি আক্রমণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করবে তারা। তবে জাহাজ সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ওই রাস্তা সম্পূর্ণ নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত তারা সুয়েজের পথ এড়িয়ে চলবে।
কোভিডের সময় একবার কিছুদিনের জন্য সুয়েজ খাল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সে সময় গোটা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য আচমকাই অনেকটা বেড়ে গেছিল। ফের তেমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
যদিও গত সোমবারই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, লোহিত সাগরের জন্য একটি নতুন প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। পণ্যবাহী জাহাজগুলিকে হুতি আক্রমণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করবে তারা। তবে জাহাজ সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ওই রাস্তা সম্পূর্ণ নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত তারা সুয়েজের পথ এড়িয়ে চলবে। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.