লালমনিরহাটে ফুটপাতের পিঠাপুলি ডেকে আনছে শীত

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: কার্তিকের বিদায় লগ্নে সন্ধ্যা নামতেই উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে উঁকি দিচ্ছে শীত। শীতের সঙ্গে লালমনিরহাটের বিভিন্ন ফুটপাতে হরেক রকমের পিঠাপুলি নিয়ে বসেছেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা।
বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রে পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল হলেও উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে শীতের আগমন ঘটে দু’মাস আগেই। এবারও এর ব্যর্তয় ঘটেনি। কার্তিক মাসের শুরুতেই হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটে শীতের আগমন ঘটেছে। দিনভর গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যার সঙ্গে প্রকৃতিতে নেমে আসে শীতের বুড়ি। দিনের বেলা বাসাবাড়িতে বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরলেও রাতে লেপ-কম্বলে জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে।
শীতের সন্ধ্যায় পিঠাপুলি বাঙালিদের একটি প্রিয় মুখরোচক খাবার। তাই শীতের দিনে ফুটপাতের দোকানের চিত্রও পাল্টে যায়। ক্রেতাদের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে পিঠাবিক্রেতারাও খাবার মেনু পাল্টান। তাই শীতের সঙ্গে ফুটপাতে শোভা পাচ্ছে পিঠাপুলির দোকান। শীতের রাতে সব থেকে জনপ্রিয় ভাপা ও চিতই পিঠা।
লালমনিরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড়, শহরে অলিগলি, বিভিন্ন হাট বাজার,  গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও জনসমাগম স্থানে বসেছে এমন পিঠাপুলির দোকান। মূলত ফুটপাত জুড়ে রয়েছে শীতের আগমন বার্তা। দুপুরে গড়িয়ে বিকেল হওয়ার আগেই পিঠাবিক্রেতারা সাজিয়ে ফেলেন দোকান। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করা গরম পিঠাপুলি পরিবেশন করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি দোকানেই সন্ধ্যার পরে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। এভাবে পিঠাপুলি বেচে সংসার চালাচ্ছেন ফুটপাতের মৌসুমি বিক্রেতারা।
লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের স্বর্ণামতি ব্রিজের পশ্চিমপাড়ে এমন পিঠাপুলি নিয়ে বসেছেন শফিকুল ইসলাম তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, চলতি সময়ে হাতে কাজ নেই। শীত এসেছে তাই সংসারের খরচ মিটাতে ব্রিজের পাশে পিঠার দোকান দিয়েছেন।
দিনভর বাড়িতে চালের আটাসহ পিঠা তৈরির নানান সরঞ্জাম প্রস্তুত করে বিকেলে দোকান চালু করেন। সেখানে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের সামনেই গরম গরম ভাপা ও চিতই পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি করেন।
শফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। যা দিয়ে চলছে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ তার সংসার। তবে, শীত বিদায় নিলে তিনি আবারও অন্য পেশায় চলে যাবেন বলে যোগ করেন তিনি।
কালীগঞ্জের কাকিনা রংপুর সড়কের শেখ হাসিনা সেতুপাড়ে পিঠাবিক্রেতা আমিনুর জানান, আগে দিনমজুর করে সংসার চালাতেন। এখন হাতে কাজ নেই। কর্মহীন হয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর শীতের ঠাণ্ডায় শরীর গরম করতে পথিকরা গরম গরম পিঠা খেতে পছন্দ করেন। শীত এসেছে তাই সেতুপাড়ে পিঠা বিক্রি করছেন তিনি।

সেতুপাড়ের পথিক আতিক, সন্তোষ রায় ও ফারুক মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, সন্ধ্যা নামলেই শীত অনুভূত হয়। ঠাণ্ডায় গরম গরম পিঠা খেতে বেশ মজাদার। তাই সন্ধ্যা হলেই পিঠা খেতে সেতুপাড়ে আসেন তারা। অনেকেই পরিবারসহ পিঠা খেতে সেতুপাড়ে ভিড় করেন বলেও জানান তারা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.