রেলিগেট ফেরিঘাটের ইজারাদারকে অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধে সতর্ক করলেন সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী

বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: জেলা পরিষদের মালিকানাধীন রেলিগেট-নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করে ফেরির টোল ফেরিতে উত্তোলনের  নির্দেশ দেন এবং খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ের জায়গা সড়ক বিভাগের নয় বলে ফেরি ইজারাদার মিঠুন সাহাকে জানিয়ে দিয়েছেন।
এই নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় বার ইজারাদারকে সরেজমিনে গিয়ে সতর্ক করলেন।
সূত্র থেকে জানা যায়, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন রেলিগেট-নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করা ও গত রবিবার (১৩ আগস্ট) জেলা আইন-শৃঙ্খলার মাসিক সভায় ফেরির অনিয়ম ও অতিরিক্ত টোল উত্তোলনের বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ায় এবং সড়ক বিভাগের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে ফেরিঘাটের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ সরেজমিনে গিয়ে ইজারাদারকে সকল অনিয়ম বন্ধের জন্য ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, খুলনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ নিয়ন্ত্রিত দিঘলিয়া – রেলিগেট – আড়ুয়া- গাজীরহাট – তেরখাদা সড়কের নগরঘাট ফেরিঘাটে পারাপারকারী যানবাহন হতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বকভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় কোনভাবে বন্ধ হচ্ছে না। উভয় পাড়ে টোলের তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের সকল নিয়ম-রীতিকে উপেক্ষা করে অতিরিক্ত টোল আদায় অব্যাহত রেখেছেন। অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে  সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশনাকে মানছেন না ইজারাদার। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, জেলা আইন-শৃঙ্খলার মাসিক সভায়  নগরঘাট ফেরিঘাটের অনিয়ম ও অতিরিক্ত টোল উত্তোলনের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে বলে জানান দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ। জেলা আইন-শৃঙ্খলার মাসিক সভায় নগরঘাট ফেরিঘাটের বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ায়  টনক নড়েছে সড়ক ও জনপদের কর্তা ব্যক্তিদের। এজন্য সরেজমিনে গিয়ে ইজারাদারকে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিদপ্তরাধীন নগরঘাট ফেরীর টোল আদায়ের জন্য মেসার্স ফারদিন ষ্টোন বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদান করা হয় যার প্রোঃ মোঃ ফিরোজ মোল্লা।
ইজারা প্রাপ্তির পর থেকে নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন, ফেরিতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বক অবৈধভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। ফেরিসহ উভয় পাড়ে টোলের তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তিনি সরকারি মসের পর মাস সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলেছেন। পারাপারকৃত যানবাহন থেকে জোর পূর্বক অতিরিক্ত টোল আদায় করছে, টোলের রশিদ চাইলে হুমকি- ধামকি প্রদান করেন।
অতিরিক্ত কয়েক গুণ বেশি টাকা উত্তলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু অতিরিক্ত ফেরীর টোল উত্তোলন নয় তার নিয়োজিত সিদ্দিক মুন্সী ও দেলোয়ার অবৈধ ভাবে নগরঘাটের রেলিগেট পারে ফেরী ও নৌকায় পারাপার কৃত মালামালের গাড়ি থেকে জোর করে পুনরায় টোল উত্তোলন করছে ফেরীর ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার নির্দেশে। যে অবৈধ কর্মকান্ডগুলোর কারণে সরকার ও সরকারি সংস্থার প্রতি মানুষের মাঝে বিরূপ ধারণা জন্ম দিচ্ছে। দ্রুত সময়ের মাঝে ফেরীতে পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি ও যানবাহন থেকে অতিরিক্ত  টোল উত্তোলন বন্ধ ও ইজারা বাতিলসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ফেরিঘাটের সকল অনিয়মের বিষয় উত্থাপিত হয়েছে বলে বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার টোল উত্তোলন করছে এমন অভিযোগ পেয়ে ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রসেনজিৎ পাল কে প্রধান করে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি সেখানে নগরঘাটা ফেরিঘাটের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়টি উঠে এসেছে এ কারণে আমি গতকাল বৃহস্পতিবার ও গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে ইজারাদারকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি এবং ফেরির টোল সঠিক ভাবে ফেরিতে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছি।
এ ছাড়াও স্থানীয় সংসদ  সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে অতিরিক্ত টোল সহ সকল অনিয়ম  বন্ধের। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন নগর ঘাটা ফেরিঘাটের ইজারাদার মোঃ ফিরোজ মোল্লার দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা থেকে কবে মুক্তি পাবেন তারা। এতো অনিয়মের প্রমাণ থাকার পর ও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা কেন?
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.