নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর সাহেববাজার গুড়পট্টি এলাকায় নকশা বহির্ভূতভাবে রাসিক ও আরডিএ’র জায়গা দখলে নিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আলী হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী সরকারি জমি ও লিজকৃত জায়গা জবরদখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ভবনটির দক্ষিণ পাশের আরডিএর জমি এবং পূর্ব-পশ্চিমের রাসিকের জায়গার একটি অংশ অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন আলী হোসেন। এমনকি রাসিক থেকে লিজ নেওয়া জায়গার ওপরেও তিনি নকশা বহির্ভূতভাবে ভবনের কাঠামো বর্ধিত করেছেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম ও রিয়াজ এ বিষয়ে রাসিক ও আরডিএ কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এর আগেও একই জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে তিনটি স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে আপস মীমাংসা হয়। উভয়পক্ষ ভবিষ্যতে কোনো বিরোধে না জড়ানোর অঙ্গীকার করেন।
কিন্তু মাত্র তিন মাস পরই আলী হোসেন ওই আপসনামার ১০ নম্বর শর্ত ভঙ্গ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারী সাইদুল ইসলাম ও স্বর্ণকার সাইফুল ইসলাম আপসনামার একটি কপি গত ১৫ মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে জমা দেন।
অভিযোগকারীদের দাবি-আলী হোসেন বহিরাগতদের সহায়তায় পেশিশক্তি ব্যবহার করে রিয়াজের লিজকৃত জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন। পাশাপাশি সাইফুল ইসলামের দোকানের উপরের অংশেও নিজের ভবন বর্ধিত করার চেষ্টা চলছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়- নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোরেই নকশা বহির্ভূতভাবে অবকাঠামো বর্ধিত করা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- এগুলো আরডিএ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নয়।
রাসিকের বাজার কর্মকর্তা তাজউদ্দিন, পরিদর্শক আব্দুল করিম ও ফজলুল করিম অভিযোগের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তারা আলী হোসেনকে অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি তা না করে সময়ক্ষেপণ করছেন বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত আলী হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি ১.৬২ শতক জমি বৈধভাবে ক্রয় করেছি। কিছু ব্যবসায়ী হিংসা ও ষড়যন্ত্র করে আমার নির্মাণ কাজে বাধা দিচ্ছে। রিয়াজ যে অংশটিকে রাসিকের জমি বলছে, সেটিও আমি মূল মালিকের ‘পাওয়ার-অফ-অ্যাটর্নি’র মাধ্যমে নিয়েছি। দলিল ও খতিয়ান সংশোধনের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেছি।”
২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর আলী হোসেন ৭০৭ বর্গফুটের একটি দোকানসহ মোট ১.৬২ শতক জমি ৫০ লাখ টাকায় ক্রয় করেন। তার ক্রয়কৃত জায়গার সামনের অংশ সরকারি ফুটপাত ও সড়ক। পাশেই রয়েছে রাসিকের লিজকৃত জায়গা, যেখানে বহু ব্যবসায়ী ৪৫ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, আলী হোসেন নিজের ক্রয়কৃত অংশ ছাড়িয়ে অতিরিক্ত জায়গা ব্যবহার করে সাততলা ফাউন্ডেশনের বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি উঠেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

















