রাসফোর্ডের জোড়া গোলে নকআউট পর্বে ইংল্যান্ড

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: মার্কাস রাসফোর্ডো জোড়া গোলে ওয়েলসকে বিধ্বস্ত করে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। কাতার বিশ্বকাপে মঙ্গলবার রাতে আল-রাইয়ানের আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রুপের শেষ ম্যাচে ওয়েলসকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
ম্যাচে রাসফোর্ডের দুই গোল ছাড়াও ইংল্যান্ডের হয়ে বাকী গোলটি করেছেন ফিল ফোডেন।
ম্যাচে জয়লাভ করলেই গ্রুপ সেরা হিসেবে শেষ ষোল নিশ্চিত হবে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যদের। তবে ড্র করলেও নকআউট পর্বে যাবে তারা। সে ক্ষেত্রে হয়তো দ্বিতীয় দল হিসেবে যেতে হতো। তাও নির্ভর করছিল গ্রুপের অপর ম্যাচের ফলাফলের উপর। তবে ওয়েলসের কাছে যদি তারা ৪ গোলে হেরে যায় তাহলে শেষ ষোলতে খেলা থেকে বঞ্চিত হবে ইংল্যান্ড।
এমন এক সমীকরণকে সামনে নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল প্রতিবেশী দেশ দুটি। কিন্তু কোন সমীকরণই সেখানে টিকেনি। প্রত্যাশিত ক্লিন সিট জয় দিয়েই বাজিমাত করেছে ইংল্যান্ড।
ম্যাচের ১০ম মিনিটে প্রথম পরিকল্পিত আক্রমণটি রচনা করে ইংল্যান্ড। এই সময় মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে হ্যারি কেন এগিয়ে গিয়ে দারুনভাবে বল পাস দেন রাসফোর্ডের দিকে। রাসফোর্ড ডি বক্সের ভেতর এগিয়ে আসা ওয়েলস গোল রক্ষককে ফাঁকি দিতে তড়িঘড়ি করে বলটি ডান পায়ে আলতো শট দিয়ে গলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে ততক্ষণে এগিয়ে আসেন ওয়েলসের গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ড।
তিনি ঝাপিয়ে পড়ে চলন্ত বলের গতি পরিবর্তন করে দেন। ফলে নিশ্চিত একটি গোল থেকে বঞ্চিত হয় ইংল্যান্ড। মুলত এটিই ছিল প্রথমার্ধে গোলের সেরা সুযোগ।
এর আগে প্রথম দশ মিনিটে ইংল্যান্ড মাঠের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখলেও একবারের জন্যও উল্লেখ করার মতো কোন আক্রমণ রচনা করতে পারেনি। ৩০ মিনিটে ইংলিশ ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়েরে মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে একেবারেই ওয়েলসের ডি-বক্সে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়েই বলটি উড়িয়ে মারেন পোস্টের বাইরে।
৩৩ মিনিটে ইংল্যান্ডের ফিল ফোডেন ডানপ্রান্ত দিয়ে ক্রস করলেও সেখানে সতীর্থ কোন খেলোয়াড় ছিল না। তবে চার মিনিট পরই রাশফোর্ড পাস দেন ফোডেনকে। কিন্তু তিনি ডান পায়ে যে শট নিয়েছিলেন সেটি ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।
এরই মধ্যে ৩৮ মিনিটে ওয়েলস গোলের একটি সুযোগ পেয়েছিল। ইংল্যান্ডের পোস্টের সামনে জটলা থেকে বেন ডেভিস বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ৪৯ মিনিটে ওয়েলসের এ্যারন রামসে ডি বক্সের ভেতর বল পেয়ে বাঁ পায়ে জোরালো শট নিলে সেটি ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
ফলে গোলশুন্য ড্রয়ে শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাল্টে যায় গোলখরা। মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে ২ গোল আদায় করে ইংলিশরা। ৫০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে মার্কাস রাসফোর্ডের ফ্রি কিকের শট ওয়েলসের প্রটেকশন দেয়ালের উপর দিয়ে বাঁক নিয়ে সরাসরি ওয়েলসের জালে আশ্রয় নেয়। তাতে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইংলিশরা।
পরের মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে হ্যারি কেনের ক্রসের বল পোস্টের সামনে থেকে ডান পায়ের টোকায় জালে জড়ান ফোডেন।
২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে পরপর দুটি আক্রমণ রচনা করে ওয়েলস। ৫৪ মিনিটে ড্যানিয়েল জেমস এর বাঁ প্রান্ত থেকে বাঁকানো শট অল্পের জন্য ইংল্যান্ডের সাইডবারের পাশ দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে কেইফার মুরের শট ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডারের মাথায় লেগে জালে প্রবেশের মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোল রক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড।
এরপর ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ইংল্যান্ড। ৬৮ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে কালভিন ফিলিপসের যোগান থেকে পাওয়া বল নিয়ে ক্ষিপ্রগতিতে ওয়েলসের ডি বক্সে ঢুকে ছোট ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে অসাধারণ এক মাটি কামড়ানো শট নেন রাসফোর্ড, যেটি ওয়েলসের গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ডের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে প্রবেশ করে।
এরপর দুই পক্ষ গোলের চেষ্টা করলেও তাতে ছিলনা গভীরতা। ফলে আর কোন গোলও হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।
এর আগে শেষ ৬ ম্যাচের সবগুলো ম্যাচেই ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিল ওয়েলস। তন্মধ্যে ৫ ম্যাচে কোন গোলই হজম করেনি থ্রি লায়ন্সরা। এরই ধারাবাহিকতা রক্ষা করল ইংলিশরা।
এর আগে দুই দল পরস্পরের মোকাবেলা করছে সর্বমোট ১০৩ বার। তন্মধ্যে ইংল্যান্ড জয়লাভ করেছে ৬৮ ম্যাচে, ড্র করেছে ২১টিতে এবং হার মেনেছে ১৪টি ম্যাচে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.