রাশিয়ার হামলায় বর্তমান যে পরিস্থিতির মুখে ইউক্রেন

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার সামরিক বাহিনী নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনে। এবার পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চল দোনবাসের আরও কিছু অঞ্চল অধিগ্রহণ করে নিতে পারে। রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আক্রমণের প্রভাব অনুভূত হতে শুরু করেছে দোনবাস থেকে শত শত মাইল দূরবর্তী পূর্বাঞ্চলের শহর ও গ্রামেও।
ইউক্রেনের টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন দেশটির কর্মকর্তারা। কারণ রাশিয়া নতুন করে তার প্রায় দুই লাখ নতুন সেনাদের নামানোর আগেই ক্লান্ত ইউক্রেনীয় সেনারা অভিযোগ করেছেন যে, তারা ইতোমধ্যে সংখ্যায় হ্রাস পেয়েছে এবং অস্ত্রের মজুদ কমে গেছে। 
ইউক্রেনীয় সেনারা বলেছেন, দোনবাসের বাখমুত শহর খুব শিগগির রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউক্রেনের অন্যান্য স্থানেও রাশিয়ান বাহিনী ছোট দলে অগ্রসর হচ্ছে। সমর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ হারানো অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে, সেই সঙ্গে দোনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেবে, যা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মূল লক্ষ্য।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রুশ বাহিনী সম্ভাব্যভাবে উত্তর থেকে এবং দক্ষিণ থেকে একটি থাবার মতো আবর্ত তৈরি করবে, যা পূর্ব এবং পশ্চিমে চলমান ইউক্রেনীয় সরবরাহগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।
রাশিয়ার প্রচেষ্টাগুলো ইতোমধ্যে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে ব্যাপক চাপের মুখে ফেলেছে, যা প্রায় ১২ মাসের ভারি লড়াইয়ের কারণে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনিয়ান সেনারা বলছেন, তাদের যে ট্যাংক ও কামান রয়েছে, তা যথেষ্ট নয় এবং প্রতিপক্ষের তুলনায় তাদের অনেক কম গোলাবারুদ রয়েছে। রুশ বাহিনী টি-৯০ ট্যাংকের মতো আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করতে শুরু করেছে, যা আমেরিকার তৈরি জ্যাভলিনের মতো ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্রের লক্ষ্য নির্ধারণ ব্যবস্থা শনাক্ত করতে সক্ষম প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং ইউক্রেনীয় সমরাস্ত্রের কার্যকারিতা সীমিত করে দেবে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি মুখোমুখি হচ্ছে। দোনবাসের একটি হাসপাতালের মর্গ ইউক্রেনীয় সেনাদের মৃতদেহ দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। অন্য একটি হাসপাতালের করিডরে আহত সেনাদের ভিড় লেগেই রয়েছে এবং প্রায় সারা দিন ধরে অ্যাম্বুলেন্স আসা-যাওয়া করছে।
নেভস্কের কাছে অবস্থানরত ‘কারপেথিয়ান সিচ’নামক ইউক্রেনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দলের সেনারা বলেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহে তাদের দলের প্রায় ৩০ জন মারা গেছেন এবং প্রায় প্রত্যেকেরই শারীরিকভাবে চরম আঘাত সহ্য করেছেন। অবস্থা এতটাই সংকীর্ণ যে, রুসিন ছদ্মনামের একজন ইউক্রেনীয় সেনা বলেন, ‘এটা শীতকাল এবং অবস্থানগুলো উন্মুক্ত; লুকানোর কোনো জায়গা নেই।’ (সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.