বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার সঙ্গে আকাশ ও নৌপথে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও স্থলভাগে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় ইউক্রেন। কিয়েভের আশঙ্কা, সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি হলে রাশিয়া তার সেনাদের পুনরায় সংগঠিত করে ফের হামলা চালাতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের চিফ অব স্টাফ সারহিয়ে লেশচেঙ্কো সোমবার (১০ মার্চ) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ তথ্য জানান।
ভাষণে লেশচেঙ্কো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না। আমরা জানিয়েছি, আমাদের একটি পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে আমরা নৌ ও আকাশপথে যুদ্ধবিরতি চাই। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিতে প্রস্তুত যে, নৌ ও আকাশপথে রুশ বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হবে না। এমনকি রাশিয়া ও ইউক্রেনের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত স্থাপনাগুলোকেও হামলার আওতামুক্ত রাখা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু স্থলভাগে কোনো যুদ্ধবিরতি নয়। কারণ এতে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পুতিন রুশ সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠিত করে ফের ইউক্রেনে হামলা চালাবেন।’
ভাষণে লেশচেঙ্কো জানান, সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিহত সেনাদের ৭০ শতাংশই প্রাণ হারিয়েছেন রুশ বাহিনীর ড্রোন হামলায়।
ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের তদবিরের জেরে কয়েক বছর ধরে চলমান টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত তিন বছরের যুদ্ধে রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— ইউক্রেনের এই চারটি প্রদেশের দখল নিয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অঞ্চলকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
এদিকে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় ওয়াশিংটন থেকে শত শত কোটি ডলারের সহায়তা পেয়েছে কিয়েভ।
তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করা এবং যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ প্রয়োগ শুরু করার পর থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কিয়েভের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। লেশচেঙ্কোর ভাষণেও এ ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন সহায়তা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা এতটাই নয় যে যুদ্ধবিরতির জন্য ওয়াশিংটন ইউক্রেনের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো শর্ত আরোপ করবে আর আমরা তা বিনা বাক্যে মেনে নেব।’ #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.