রামেক হাসপাতাল প্রস্তুত ওমিক্রন মোকাবেলায় 

নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন বছরের শুরু থেকেই বিশ্বে আবারো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ ইউরোপের অনেক দেশই ওমিক্রনের দাপটে অনেকটা কাবু হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এই ‘ওমিক্রন সুনামি’ মোকাবেলায় যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীতেও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ওমিক্রন মোকাবেলায় রামেক হাসপাতাল পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগির সংখ্যাও একেবারেই কমে গিয়েছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে রামেক হাসপাতালে আক্রান্ত কিংবা সাসপেক্টেড রোগির সংখ্যা বাড়ছে।
রামেকের করোনা ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে- হাসপাতালে চলতি মাসের জানুয়ারির প্রথম ১২ দিনে ৬২ জন ভর্তি হয়েছে। ভর্তি রোগির মধ্যে নারী ৩২ ও ৩৫ জন পুরুষ। গত ১ জানুয়ারি একজন নারী ভর্তি হন করোনার উপসর্গ নিয়ে। ২ জানুয়ারি দু’জনের মধ্যে নারী ও পুরুষ ভর্তি হয়। ৩ জানুয়ারি ভর্তি হওয়া ৬ জনের মধ্যে একজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। ৪ জানুয়ারি আটজন ভর্তি হয়। এদের মধ্যে তিনজন পুুরুষ ও পাঁচজন নারী। এদিন দু’জন পুরুষের করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয়। ৫ জানুয়ারি ভর্তিকৃত চারজনের মধ্যে দু’জন নারী ও দু’জন পুরুষ। এদিন একজন পুরুষের মৃত্যু হয়।
৬ জানুয়ারি সাতজনের মধ্যে চারজন নারী ও তিনজন পুরুষ। ৭ জানুয়ারি ভর্তিকৃত নয়জনের মধ্যে তিনজন নারী ও ৬ জন পুরুষ। এছাড়া ৮ জানুয়ারি ভর্তি হওয়া সাত জনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দুইজন নারী, ৯ জানুয়ারি ৬ জনের মধ্যে তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ। ১০ জানুয়ারি ৫ জনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুই জন নারী। ১১ জানুয়ারি ৭ জনের মধ্যে ৬ জন নারী ও একজন পুরুষ। এদিন এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। ।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন ৫ গুণ কম ক্ষমতাসম্পন্ন বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু এটি দ্রুত বাতাস কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। এজন্য এটি সবচেয়ে বেশি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গত কারণেই রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটকে ওমিক্রন মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কেননা, হয়তো অদূর ভবিষ্যতে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মত দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে।’
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রায় ৭০০ সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন রয়েছে। হাইফ্লোনেজাল ক্যানুলা রয়েছে, অক্সিজেন কনসান্ট্রেটর রয়েছে ৩০০ টি। ১ হাজার ৪শোটি অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ২৪টি বাইপেপ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ১ হাজার লিটারের একটি ভিআই ট্যাংক। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই ভিআই ট্যাংকটি ৩ হাজার লিটারে উন্নীত করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে রামেক হাসপাতাল পরিচালক বলেন, ‘আপাতত করোনা ওয়ার্ডে (২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড) প্রশিক্ষিত ২টি চিকিৎসক টিম (১৬ জন) কাজ করছে। এছাড়া করোনা ক্যাবিনে ১২ জন ডাক্তার চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া পর্যাপ্ত নার্সও সেখানে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে গেলে সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তার-নার্স সংযোজন করা হবে।’
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘করোনা আক্রান্তের হার বিবেচনায় রাজশাহী ইয়েলো জোনে রয়েছে। আক্রান্তের হার যাতে বাড়তে না পারে সেজন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এছাড়া ওমিক্রন মোকাবেলায় আগে থেকেই বাড়তি সতকর্তা অবলম্বন করা হচ্ছে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো: মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.