রাবি শিক্ষক রেজাউল হত্যা মামলার রায় কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ দুই বছর পর আলোচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় রায় কাল (মঙ্গলবার)। গত ১১ এপ্রিল উভয়পক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ, শুনানি ও দুই দিনের যুক্তিতর্ক শেষে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, ‘২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল। মামলায় ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।’ তিনি আরো বলেন ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জীবিত এবং মৃত আসামিদের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পেরেছেন তিনি। রায়ে জীবিত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছেন তিনি।’

এদিকে হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চায় মামলার বাদীপক্ষ ও নিহতের পরিবার। মামলার রায়ের ব্যাপারে নিহতের মেয়ে রেজোয়ানা হাসিন শতভী বলেন, ‘আমরা অপরাধীদের সবার ফাঁসি চাই। মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে আমরা আশাবাদী।’ তবে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলামকে দুই বছরেও পুলিশ গ্রেফতার দেখাতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘শরিফুল বাবার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। সে এখনও গ্রেফতার হয়নি।

এটি আমাদের জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক।’ ইংরেজী বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ.এফ.এম মাসউদ আখতার বলেন, ‘রেজাউল স্যারের হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। হওয়ার কিছু নেই। এদিকে অধ্যাপক রেজাউল হত্যার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আটক এক আইএস জঙ্গির সঙ্গে শরিফুলের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)।

তাই শরিফুল ভারতেই পালিয়ে আছে বলে ধারণা করছে রাজশাহীর মহানগর পুলিশ। এছাড়াও এর আগে শরিফুলকে ধরিয়ে দিতে রাজশাহী মহানগর পুলিশ দুই লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা দিয়েছিল তবু তার কোন হদিস মেলেনি। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল নগরীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাড়ির কাছে অধ্যাপক রেজাউল করিমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় নিহত শিক্ষকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় হত্যা অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করেন নগরীর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। প্রায় সাড়ে ৬ মাসের তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর ৮ জনকে আসামী করে প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেন তিনি।

অভিযুক্ত ৮ আসামির মধ্যে তিনজন খায়রুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান ও তারেক হাসান ওরফে নিলু ওরফে ওসমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। আর ৪ জনকে বগুড়ার শিবগঞ্জের মাসকাওয়াত হাসান ওরফে আব্দুল্লাহ, নীলফামারীর মিয়াপাড়ার রহমতুল্লাহ, রাজশাহী মহানগরীর নারকেলবাড়িয়া এলাকার আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.