রাবি ছাত্রলীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

রাবি প্রতিনিধি: আবাসিক হলের অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছে। পরে প্রক্টরের উপস্থিতিতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও এখনো উভয় পক্ষে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবখ্শ হলে এই ঘটনা ঘটে। বিশ^বিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহতরা হলেন: একরাম হোসেন রিমন, মারুফ পারভেজ, জসিম ও লিমন। তারা সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির কর্মী।

ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী লিমন হোসেন তার দুই বান্ধবীকে নিয়ে হলের অতিথি কক্ষে আসেন। সেখানে আগে থেকেই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী ও ফিনান্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম তার এক বন্ধুসহ বসে ছিলেন। লিমন অতিথি কক্ষে বসার জায়গা করে দিতে বলায় তাকে মারধর করেন কামরুল।

পরে লিমন তার কয়েকজন বন্ধুকে ডেকে কামরুলের কক্ষে যান। তার কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় জানালা ভাঙচুর করেন লিমন ও তার বন্ধুরা। এরপর সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারীরা হল গেইটের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে লিমন ও তার বন্ধুরা গেলে তাদের ওপর হামলা চালান তারা।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকি বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সম্মেলনের পর থেকেই আমার সঙ্গে যারা চলাফেরা করত, তাদেরকে নানা ধরনের অত্যাচারের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এমনকি আড়াই বছর ধরে আমাদেরকে কোন পদ দেয়া হয়নি। বরং আমার কর্মীদেরকে মারধর করেছে। তারা হলে থেকে যে ঠিকমতো পড়ালেখা চালিয়ে যাবে সেই অবস্থাও নেই।’

‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত, আরিফ বিন জহির, মিজানুর রহমান সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক চঞ্চল কুমার অর্ক, ছাত্রলীগ কর্মী সুব্রত মারামারিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে আজকের ঘটনাটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবহিত করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমরা মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। এখানে কোন দল বা পক্ষের কাউকে মারধর করা হয়নি। আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। পরিস্থিতি এখন শান্ত।’

মাদারবখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমি আজকে ঢাকায় যাচ্ছি। সিরাজগঞ্জে পৌঁছার পর জানতে পারলাম দুজন ছেলে মারামারি করেছে। আর পরে এটা নিয়ে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়। পরে আমি প্রক্টর ও হলের অন্যদের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে বলি।’

ওই দুজনই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ঢাকা থেকে ফিরে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে হল থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘অতিথি কক্ষে বসাবসি নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। অন্য কোনো কারণ ছিল না। এটার সমাধান করার চেষ্টা চলছে। এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কেউই অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে না।’

আহতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চারজন আহত হয়েছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.