রাজ্যসভায় তৃণমূল প্রার্থী প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার

(রাজ্যসভায় তৃণমূল প্রার্থী প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি: হ্যাঁ, চমকই বলা যেতে পারে। রাজনৈতিক চমক। এই নামটার কথা সম্ভবত ভাবনাতেও আসেনি কারও। কিন্তু ভাবতে পেরেছিলেন শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এবং বাস্তবে রূপ দিলেন তিনিই। রাজ্যসভার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনীত করলেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সি ইও জহর সরকারকে। আজ শনিবার (২৪ জুলাই) মমতা টুইট করে ঘোষণা করেছেন প্রার্থীর নাম।
প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী গত ২২ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় রাজ্যসভার এই আসনটি শূণ্য হয়। আগামী ৯ আগস্ট এই আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। দীনেশ ত্রিবেদী ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজ্যসভায়। তাঁর মেয়াদ ছিল ২০২৬ এর ২ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি দল এবং সাংসদ পদ ছাড়েন।
তৃণমূল রাজ্যসভার শূণ্য আসনে কাকে পাঠাবেন,সেই নিয়ে জল্পনার পারদ চড়ছিল ক্রমশই। শোনা যাচ্ছিল, বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিংহ পেতে পারেন তৃণমূলের মনোনয়ন। উঠেছিল বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরে আসা মুকুল রায়ের নামও। কিন্তু আসল নামটা ভেবে রেখেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভাবনার পথ ধরেই আজ শনিবার সকালে জহর সরকারকে ফোন করেন নেত্রী নিজে। এ ব্যাপারে তাঁর মতামত জানতে চান। একটু ভেবেই প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জানিয়ে দেন,তিনি রাজি। এর পরেই মমতা ঘোষণা করেন তাঁর নাম।
খুব দাপুটে আমলা বলতে যা বোঝায় ৪২ বছরের চাকরি জীবনে তা কোনও দিনই ছিলেন না জহর সরকার। তবে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বেশ মুন্সীয়ানার সঙ্গেই বিভিন্ন দপ্তরের গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কাজ করেছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হিসেবে। শিক্ষা সচিব পদেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তার আগে ৮০-র দশকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর রীতিমতো প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর কর্মজীবনে ইতি ঘটে প্রসার ভারতীর সিইও হিসেবে। তবে এই পদে থাকার সময় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছিল বলে শোনা যায়।
অবসরের পরে সংবাদপত্রে প্রকাশিত কয়েকটি নিবন্ধে প্রতিফলিত হয়েছিল সেই উষ্মা। কিছুদিন আগে বিদায়ী মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল, তাতে দ্বিধাহীনভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেন জহর সরকার। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি।
বিধানসভায় তৃণমূলের বিশাল সংখ্যাধিক্যের জোরে জহর সরকারের রাজ্যসভায় যাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত বলেই মনে করছে দল। বিরোধী দল বিজেপি অবশ্য দলের প্রার্থীর ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি সৌম্য সিংহ। # 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.