রাজশাহী স্টেশনের বিশ্রামাগার থেকে যাত্রীর ব্যাগ নিয়ে উধাও বোরখা পরিহিত মহিলা!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রবিবার বেলা ১টা বেজে ৪৫ মিনিটে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের শোভন যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার থেকে চোঁখের পলকেই চুরি হলো আমেনা খাতুন নামের এক যাত্রীর ব্যাগ।
ক্ষতিগ্রস্থ ঐ যাত্রীর দেয়া তথ্যমতে, ব্যাগটির মধ্যে ছিল দামি একটি এন্ড্রোয়েট মোবাইল ও সাধারণ একটি মোবাইল। এছাড়াও ঐ ব্যাগে ছিল প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ চার হাজার টাকা।
ক্ষতিগ্রস্ত ঐ মহিলা চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। স্বামী কামাল হোসেন ও দেড় বছরের এক শিশু সন্তানকে নিয়ে দর্শনা থেকে শশুড় বাড়ি মোহনপুরে আসেন কপোতাক্ষ্য আন্তঃনগর ট্রেনে করে।
চোরকে সনাক্ত করতে স্বামী-স্ত্রী স্টেশন ম্যানেজারের কক্ষে গিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখেন। সেখানে চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টির সত্যতাও মেলে। আমেনা খাতুনের দেয়া তথ্যের সাথে ভিডিও ফুটেজের সত্যতাও পাওয়া গেছে। বোরখা পরিহিত দুই মহিলা ব্যাগ চুরির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল বলে ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পরবর্তীতে জিআরপি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ক্ষতিগ্রস্থ ঐ দম্পত্তি।
আমেনা খাতুনের দেয়া তথ্য মতে, ট্রেন থেকে নেমে দুটো ল্যাগেজ নিয়ে তারা ওয়েটিং রুমে প্রবেশ করে কিছুটা ফ্রেশ হবার জন্য। বিশ্রাম কক্ষের প্রবেশদ্বারের পশ্চিম দিকের চেয়ারে স্বামীর কোলে শিশু সন্তানকে দেয় আমেনা।
চেয়ারের পাশে থাকা একটি ড্রেসিং টেবিলে উপর হাতে থাকা ছোট ব্যাগটি তিনি রাখার সাথে সাথেই বোরখা পরিহিত দুজন মহিলা প্রবেশ করেন বিশ্রাম কক্ষে। অপরিচিত ঐ মহিলারা সেখানে প্রবেশ করে স্থান করে নেয় আমেনার স্বামীর পাশের আসনটিতে।
একজন চেয়ারে বসে থেকে আমেনার স্বামীর কোলে থাকা শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করে তোমার নাম কি। পরক্ষনেই অপরিচিত মহিলার মধ্যে একজন আমেনার স্বামীর সামনে দাড়িয়ে তাদের সাথে সখ্যতা তৈরির চেষ্টা করেন। আমেনা বেগম তার হাতে থাকা ছোট ব্যাগটি আসনের পাশে থাকা ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে ওয়াসরুমে যাবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কালো রংয়ের বোরখা পরিহিত মহিলাটি আমেনার ব্যাগটি নিজের হস্তগত করা মাত্রই তরিঘরি করে বেড়িয়ে পরেন বিশ্রাম কক্ষ থেকে।
মহিলাটির সাথে ছিল পাঁচ থেকে ছয় বছরের একটি শিশু। তার পরেই বেরিয়ে পরেন অন্য আরেকজন। উভয় মহিলার শরীর আবৃত ছিল বোরখাতে। যার কারনে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদেরকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানান স্টেশন মাস্টার আব্দুল করিম।
ভিডিও ফুটেজটি সম্পূর্ণ দেখলে বোঝা যেতো মহিলাটি ঐ কক্ষ থেকে বেরিয়ে কোন পথ দিয়ে স্টেশন ত্যাগ করলো। এছাড়া আরো বোঝা যেতো, মহিলাটি ব্যাগ চুরি করার পরে ব্যাগ নিয়ে বের হবার সময় তার অন্যকোন সঙ্গীর সাথে স্টেশনে কথা বললো কিনা।
ভিডিওটি আরো বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষন করলে বোঝা যেতো, মহিলাটির সঙ্গে স্টেশনে কর্মরত কোন ব্যক্তি বা মহিলা জড়িত আছে কিনা। কিন্তু, অফিসের নিয়মানুযায়ী পূর্ণাঙ্গ ভিডিও ফুটেজ দেখতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি
লাগবে বলে সেটি দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন দায়িত্বরতরা।
উল্লেখ্য, বিশ্রাম কক্ষের যে স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে সেখান থেকে চুরি হয়ে যাওয়া স্থানটিসহ প্রায় পনের ফিট পশ্চিমে কোন কিছুই দেখা যায়না স্পষ্টভাবে।
ব্যাগটি চুরি করে বেড়িয়ে যাবার ফুটেজটি শুধুমাত্র ধরা পরে ক্যামেরায়। অপেক্ষারত যাত্রীরা এবিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, এমন ধরনের অনিরাপদ বিশ্রামাগারে ঈদের সময় ঝুঁকিটা একটু বেশি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টির দিকে একটু সুনজড় দেয়া।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.