রাজশাহী রেলস্টেশনকে শতভাগ ঝুকিমুক্ত চান যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অন্যতম সৌন্দর্যময় রেলস্টেশন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন। রেলভ্রমনকারী যাত্রীরা বেশ আনন্দের সাথেই যাতায়াত করে থাকেন। স্টেশনের মূল ফটকের মনোরম এবং পরিচ্ছন্ন দৃশ্য মুগ্ধ করে সর্বসাধারণকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের যাত্রীরা এসে আনন্দিত হয়ে থাকেন।

তেমনি মোঃ ফরিদ রহমান নামের একজনের বাসা যশোরের বেনাপোলে।

মাঝেমধ্যে রাজশাহী আসেন।রেলভ্রমন উপভোগ করেন।  রাজশাহী রেলস্টেশন সম্পর্কে ইতিবাচক  বক্তব্য ফুটে উঠল তার মুখে।

তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান স্টেশন এটি। মূলফটকের সৌন্দর্য বেশি মুগ্ধ করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার আব্দুর রহমান রাজশাহী-ঢাকা নিয়মিত যাতায়াত করেন। তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, রাজশাহীর রেলস্টেশন কমলাপুর রেলস্টেশনের চেয়েও পরিচ্ছন্ন এবং দৃষ্টিনন্দন।
সন্ধ্যাবেলা স্টেশন মূল ফটকের সামনে ফুলের সুবাস আর সৌরভ তাকে বিমোহিত করে।

তবে এসবকিছু ভাল লাগলেও স্টেশনকে নিয়ে সর্বসাধারণের কিছু প্রত্যাশাও আছে। আছে কিছু সমস্যা সমাধানের দাবি। রেলস্টেশনের প্লাটফরম এবং কাউন্টারে যত্রতত্র রাত্রিযাপন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও এনিয়ে যাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ফুটে উঠেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাউন্টার এবং প্লাটফরমের মেঝেতে রাত্রিযাপন করছেন হাজারো মানুষ।কারো মাথার নিচে পোটলা কেউ বা স্যান্ডেলকে বালিশ বানিয়ে ঘুমাচ্ছেন। যদিও যাত্রীদের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ থেকে বিশ্রামাগার রয়েছে। স্টেশনের মেঝেতে রাত্রিযাপন নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন।রাজশাহী-ঢাকাগামী যাত্রী পলাশ কুমার সরকার। এর আগে প্লাটফরমে ঢুকতেই ছিনতাই এর কবলে পড়েছিলেন তিনি। প্লাটফরমের ভেতর স্বল্পবয়সের কয়েকজন ছেলে তার টাকাপয়সা,মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় বলে তার অভিযোগ।তাই নিরাপত্তার স্বার্থে  যত্রতত্র শুয়ে থাকা দুরপাল্লাগামী যাত্রীদের জন্য আশঙ্কা হিসেবেই নিচ্ছেন তিনি।

রাজশাহীতে অধ্যয়নরত সিরাজুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, রাজশাহী স্টেশনে নামার পরই ছিনতাই নিয়ে ভয়ে থাকতে হয়।এর আগে তাকে কয়েকজন টোকাই এর কবলে পড়তে হয়েছিল। স্টেশনের এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা চান তিনি।

রাজশাহী স্টেশনপাড়ায় অপকর্মের দৃশ্য নতুন নয়। টিকিট কালোবাজারি,মাদক ব্যবসা,ছিনতাই, নারীদের দেহব্যবসার মতো গুরুতর অভিযোগ আছে।
অবশ্য এর আগে রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকায় নানামুখী অপকর্মের বিষয়ে একাধিক সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
বিভিন্ন সময়ে দুষ্কৃতিকারীদেরকে  পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
তবুও নানামুখী সমস্যা এবং স্টেশনপাড়ায় জনসাধারণের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।একদিকে টিকিট কালোবাজারিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারন যাত্রীরা।অপরদিকে ছিনতাই এর  কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাতে হচ্ছে।

জনগণের দাবি, শতভাগ নিরাপত্তা দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করা। প্রয়োজনে রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকাকে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ নজরদারীতে নিয়ে আসা যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে রেলস্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে রেলওয়ে থানার (জিআরপি) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাঈদ ইকবাল বিটিসি নিউজকে জানান, রেলস্টেশনে সার্বক্ষণিক ১ জন পুলিশ অফিসার এবং ৫ জন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ নজরদারীতে এবং অভিযানের মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

তবে প্লাটফরম ও কাউন্টার মেঝেতে রাত্রিযাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তুলনামূলক দরিদ্র মানুষেরা এখানে রাত্রিযাপন করেন। এটা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেনা। তবুও আমরা গোয়েন্দা নজরদারী রাখছি। কোনো অপরাধ দেখতে পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্টেশনের ভিতরে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে রেলওয়ে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত আছে বলেও জানান রেলপুলিশের এই কর্মকর্তা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি আমানুল্লাহ আমান।

ছবিঃ বিটিসি নিউজ এর ফটো সাংবাদিক শামীম আক্তার ডাবলু।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.