রাজশাহী মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসক কতৃক মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বিনাচিকিৎসায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং ছেলেসহ মুক্তিযোদ্ধার ওপর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়।
আজ শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ২০২০ ইং সকালের দিকে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী জেলা ও মহানগর ইউনিটি কমান্ড।
নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ড আয়োজিত এ মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে এমন ঘোষণা দেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ইন্টার্ন নামের কিছু মাফিয়া চিকিৎসক।
এ হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আর বিচার না হলে মুক্তিযোদ্ধারা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। আগুন জ্বলবে পুরো রাজশাহীতে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগর শাখার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে এবং সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ মহানগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, চিকিৎসা অবহেলায় মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এটি নিরপেক্ষ নয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকলেই চিকিৎসক। এ কারণে তারা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের রক্ষা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। অচিরেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা না হলে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। যেসব ইন্টার্ন চিকিৎসক হামলার সাথে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আর এটি না হলে আমরাই তাদের বিচার করব।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমীন প্রামানিক, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, হাকিম আতাউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মোর্শেদ রঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন মোল্লা, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়াও আগামীকাল রবিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে ঘোষণা দেন মুক্তিযোদ্ধারা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসা হাসপাতালে পারুল বেগম (৬৫), নামের এক নারীর (মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী) মৃত্যুতে অভিযোগকে কেন্দ্র করে নারীর ছেলের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসদের প্রথমে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে ওই নারীর ছেলেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেদিন বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি মায়ের দাফনের কাজে অংশ নেন।
মৃত নারীর (মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী) স্বজনদের অভিযোগ, কোমরের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে হার্ট অ্যাটাকে তিনার মৃত্যু হয়। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ চিকিৎসা করেনি। উল্টো এর প্রতিবাদ করলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিহতের ছেলে রাকিবুলকে মারধর করেছেন। বাধা দিতে গেলে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ইসহাক আলীকেও একটি মারধরকরেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.