রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র কালো পতাকা মিছিলে পুলিশি বাধা

 

বিএনপি প্রতিবেদকবিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মূলক ফরমায়েশি আদালতের রায়ের প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কালো পতাকা মিছিল করে। সেইসাথে এই মিছিল থেকে তারা বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি দাবীব করেন।

আজ রোববার বেলা ১১টায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগটনের নেতাকর্মীার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে নগরীর মালোপাড়াস্থ্য ভূবন মোহন পার্কে আসার চেষ্টা করলে বাস্তায় নেতাকর্শীদের পুলিশ বাধা প্রদান করে এবং লাঠি চার্জ করে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এদিকে বেলা পৌঁনে ১১টার দিকে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন মালোপাড়া রাস্তা দিয়ে মিছল নিয়ে ভুবন মোহন পার্কের প্রধান গেটের দিকে যাওয়া চেষ্ঠা করলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান বাধা প্রদান করেন। মিছিল সেখান থেকে ফিরিয়ে দেন।

এদিকে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহামন মিনুর নেতৃত্বে গণকপাড়ার মোড় থেকে পৃথকভাবে মিছিল নিয়ে ভূবনমোহন পার্কের দিকে আসতে থাকলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে। উভয় মিছিল থেকে ছাত্রদলের জিন্নাহ, পাপ্পু, সিয়াম ও ইব্রাহিম নামে চার নেতাকে গ্রেফতার করে থানা হাজতে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা ভূবন মোহন পার্কে প্রবেশ করেন। এসময়ে পার্কের চারদিকে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং পুলিশ পার্কের চারিদিক ঘিরে রাখে।

 

 

পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মহানগর নেতাকর্মীরা মিছিল শেষে ভুবনমোহন পার্কে সমাবেশ করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহামন মিনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত খালেদ, বিএনপি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন ও বাগমারা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল গফুর।

অন্যদের মধ্যে বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহামন পিন্টু, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, মতিহার থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, বর্তমান সভাপতি আবুল কারাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: মাঈনুল হক হারু, মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি আনোয়ার আকতার কাজল, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনন্দ কুমার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউজ্জামান পরাগ, মহানগর তাঁতী দলের সভাপতি আরিফুল শেখ বনি, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু, মনিরুল ইসলাম জনি, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিুটু, সাবেক কাউন্সিলর দিলদার হোসেন, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপিকা সখিনা বেগম, সামসুন্নাহার, জরিনা, গুলশান-আরা- মমতা, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি ও নাহিন আহম্মেদসহ মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সাংগঠনিক ৩৫টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিনু বলেন, রাজশাহীর মাটি বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়ার ঘাটি। এই মাটি থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের সুত্র হয়েছিল। বিএনপি একটি সুশৃংখল একং সুসংগঠিত একটি দল। এই দলকে কোন ভাবে পুলিশ দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবেনা। বিশেষ এলাকার কিছু পুলিশ বিএনপি’র শান্তিপুর্ণ আন্দোলন ও সমাবেশে বাধা প্রদান করছে। অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। অথচ আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা রাস্তা বন্ধ করে সমাবেস, মিছিল, মিটিং করলে সেখানে পুলিশ কোন বাধা প্রদান করছেনা। উপরোন্ত সহরেযাগিতা করছে। পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনের এই দ্বৈত আচরণ আর সহ্য করা হবেনা। আগামী ৩০ তারিখ রাজশাহীতে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশ। এই সমাবেশ হবে সরকার পতনের সমাবেশ। এই সমাবেশ থেকে সরকার পতনের কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

মিনু আরো বলেন, জেল জুমুল নির্যাতন করে বিএনপি, ২০ দল এবং জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের নেতাকর্মীদের আর দমিয়ে রাখা যাবেনা। ১ নভেম্বর থেকে সকল নেতাকর্মী সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে থাকবে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোন নেতাকর্মী ঘরে ফিরে যাবেনা বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন। সেইসাথে তিনি রাজশাহীতে জাতীয় এক্য ফ্র্রন্টের সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ প্রদান করেন। সকল বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ স্থলে আসার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানান।

শাহিন শওকত বলেন, বিএনপি কোন পথের দল নয়। এই দলের আদর্শ হচ্ছে দেশের মধ্যে সব থেকে ভাল এবং জনগণের প্রাণের দল। এই দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা, হামলা, নির্যাত, খুন ও গুম করে কোন লাভ হবেনা। এপর্যন্ত বহু মামলা তাদের নামে হয়েছে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার জেলে রেখেছে। বিন্তু বিএনপি’র জনপ্রিয়তা কোনভাবেই কমে নাই। বিএনপি’র গণজোয়ার দেখে এই অবৈধ সরকার ভীত হয়ে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে রেখেছে। এই পুলিশ বাহিনী সরকারের শেষ রক্ষা কবচ হবেনা বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।

সেইসাথে আগামীতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ বিএনপি’র নেতাদের মামলা এবং সাজা প্রত্যাহার এবং নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবীর আন্দোলনে সকল নেতাকর্মীকে বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে থাকার আহবান জানান শাহিন।

সমাবেশে বিএনপি নেতা মিলন বলেন, ওয়ান ইলেভেনের মূল হোতা বর্তমান দেশের অবৈধ ও অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সরকার পুণরায় ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং সাজা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। সরকার মনে করছে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে একতরফা নির্চাচন করে পুনরায় ক্ষমতায় যাবে। কিন্তু সে আসার গুড়ে বালি পড়ে গেছে। দেশে ৮০ভাগ মানুষ এখন বিএনপি’র পক্ষে।

এই অবস্থা দেখে এই ফ্যাসিস্ট সরকার পুলিশ ও গুন্ডাবহিনী লেলিয়ে দিয়ে বিএনপি’র সভা, সমাবেশ ও মিছিল করতে বাধা প্রদান করছে। সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট আর কোন বাধা মানবেনা। সকল বাধা উপেক্ষা করে তারা রাজপথে নামবে এবং অবস্থান নেবে। এতে যদি সকল নেতাকর্মীকে জেলে এবং প্রান দিতে হয় তাতেও প্রস্তুত বলে জানান মিলন। সেইসাথে ৩০ তারিখের সমাবেশে সকল নেতাকর্মীকে সময়মত উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে বুলবুল বলেন, এই অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ওমরা পালন করে দেশে এসে মিথ্যাচার করছে। অতিতের ন্যায় এখন ভন্ডামী করার জন্য মাথায় কালো হেজাব ব্যবহার শুরু করেছে। তার এই রুপ বাংলার মানুষ জানে। এইরুপ ধারণ করে এবার আর লাভ হবেনা। বিএনপি নির্বাচন করবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ববধায়ক সরকারের অধিনেই নির্বাচন হবে। সেইসাথে বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের পুর্বেই মুক্ত করা হবে। কোন ধরনের পাতানো নির্বাচন আর এদেশের মানুষ মানবেনা।

জীবন দিয়ে হলেও এই সরকারের পতন ঘটানো হবে। বিএনপি’র গণজোয়ার শুরু হয়ে গেছে। এই জোয়ারে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ভেসে যাবে। কেউ কুল কিনারা খুঁজে পাবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেইসাথে ৩০ তারিখ জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশ সফল করতে সকল নেতকর্মীকে সময়মত সমাবেশ স্থলে আসার আহবান জানান। এছাড়াও কালোপতাকা মিছিলে সকল বাধা উপেক্ষা করে অংশগ্রহন করায় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান বুলবুল।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.